শসা ও খিরার পার্থক্য - শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আপনারা অনেকেই শসা ও খিরার পার্থক্য কি, শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। তাই আজকের এই পোস্টে আমরা শসা ও খিরা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
শসা ও খিরার পার্থক্য
এছাড়াও এই পোস্টে জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কিনা, ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম, শসা খেলে কি গ্যাস হয় এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরব যা আশা করি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। তাই আজকের পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

সূচিপত্র: শসা ও খিরার পার্থক্য - শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

.

ভূমিকা

শসা বা খিরা আমাদের অনেক পরিচিত একটি ফল। অনেকের কাছে এটি সবজি হিসেবেও পরিচিত। তবে উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে এটি একটি ফল। অনেকের কাছে এটি সবজি হিসেবেও পরিচিত। এটি দেখতে সাধারণত সবুজ রঙের হয়ে থাকে এবং আকারে লম্বা হয়।

শসা বা খিরার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে সঠিক নিয়মে না খেলে এটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে। এই ফলটি সাধারণত পৃথিবীর সব জায়গাতেই পাওয়া যায় এবং যে কোনো খাবারের সাথে অথবা সালাদ হিসাবে খাওয়া হয়ে থাকে। চলুন এখন মূল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক।

শসা ও খিরার পার্থক্য

শসা ও খিরার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ফলটি একই হলেও জাত আলাদা। আমরা অনেকে শসা ও খিরার পার্থক্য না জানার কারণে বাজার থেকে শসার বদলে খিরা অথবা খিরার বদলে শসা কিনে আনি। এই দুইটি দেখতে কিছুটা আলাদা হয়ে থাকে। শুধু দেখতেই নয় বরং এদের স্বাদও আলাদা হয়ে থাকে। তাই এদের মধ্যে পার্থক্য জানাটা খুবই জরুরী। শসা ও খিরার মধ্যে পার্থক্য হল:
  • শসা সাধারণত অনেক বেশি লম্বা হয়ে থাকে ও চিকন হয় এবং খিরা বেশি লম্বা না হলেও শসার থেকে মোটা হয়ে থাকে।
  • শসার রং সাধারণত হালকা সাদা ও সবুজ হয় এবং অনেক সময় হালকা লাল রঙের মিশ্রণও থাকে। অপরদিকে খিরা সাধারণত গাঢ় সবুজ রঙের হয়ে থাকে।
  • শসার শরীর পুরোপুরি মসৃণ হয়ে থাকে। আর খিরা তেমন মসৃণ হয়না, অনেক সময় খিরার পুরো শরীরে পক্সের মতো ফোলা ফোলা চিহ্ন অর্থাৎ, ছোট ফুটি ফুটি দেখা যায়।
  • শসা খেতে সাধারণত হালকা মিষ্টি এবং প‍্যানসে লাগতে পারে। আর অপরদিকে খিরার একটু তেতো হয়ে থাকে।
আশা করি আপনি শাসা ও খিরার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পেরেছেন। উপরের তথ্য গুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করলে আপনি সহজেই শসা ও খিরার পার্থক্য সহজে সনাক্ত করতে পারবেন। এখন আর বাজারে গিয়ে আপনাকে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। উপরের পার্থক্যগুলো লক্ষ্য করে আপনি সহজেই শসা অথবা খিরা আলাদা ভাবে কিনতে পারবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্য নিচে শসা ও খিরার ছবি দেওয়া হল:
শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
শসার ছবি

শসা ও খিরার পার্থক্য
খিরার ছবি

শসা খাওয়ার উপকারিতা

শসা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শসা রাখা উচিত। শসা খাওয়ার উপকারিতা গুলো হল:
  • শসাতে প্রচুর পরিমাণ পানি থাকে। এজন্য শসা খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে এবং পানি শূন্যতা দূর হয়। আপনার শরীর ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি পাবে।
  • শসা বা খিরাতে ক্যালরি নেই বললেই চলে। এখানে প্রয়োজনীয় ফাইবার রেখে যা আপনাকে ক্ষুধা থেকে দূরে রাখবে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
  • যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারা নিয়মিত শসা খেতে পারেন। কেননা শসা খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
  • শসা বা খিরাতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করেন।
  • শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এটি ত্বক শুষ্ক হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
  • শসা দিয়ে ভাল ফেসিয়াল করা যায়। এটি পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগালে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া শসা গোল করে কেটে চোখের উপর দিয়ে রাখলে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়।
  • শসা হার্ট এবং কিডনি ভালো রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।

খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা

সকালে আপনি ঘুম থেকে উঠে কোন কিছু না খেয়েই খালি পেটে শসা খেতে পারেন, এতে অনেক উপকারিতা রয়েছে। সকালে খালি পেটে শসা খেলে শরীরে দূষিত পদার্থ দূর হয়। সারাদিনের পানির চাহিদা পূরণ হবে। সারাদিন যেসব খাবার খাবেন তা সহজে হজম করতে সাহায্য করবে। এছাড়া ওজন কমাতেও অনেক সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কি

শসাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ, যা গর্ভবতী মহিলাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। এজন্য গর্ভবতী মহিলাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শসা খাওয়া উচিত। শসা ভ্রূণের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পেট ঠাণ্ডা রাখে, শারীরিক এবং মানসিক চাপ হ্রাস করে। সুতরাং গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে। তবে অবশ্যই নিয়ম মেনে খেতে হবে।

শসা খেলে কি গ‍্যাস হয়

শসা খেলে অনেক সময় পেটে গ্যাস হতে পারে কিছু মানুষের। বিশেষ করে অতিরিক্ত তেল মসলা এর সাথে শসা খেলে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে সাধারণ সুস্থ মানুষ কাঁচা শসা খেলে পেটে গ্যাস কমে।

কেননা এতে অনেক পানি, ফাইবার এবং উপকারী উপাদান রয়েছে, যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পেটে গ্যাস কমাতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় শসা খেলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম

শসাতে প্রচুর পরিমাণ পানি এবং খুবই কম ক্যালরি রয়েছে। তাই শসা খাওয়া আপনার জন্য ওজন কমানোর একটি সেরা মাধ্যম হতে পারে। যারা শসা খেয়ে ওজন কমাতে চান, তারা নিয়মিত সকালে একটি করে কাঁচা শসা খেতে পারেন। এতে অনেক উপকার হবে।

আবার বিকেলে একটি শসা খেতে হবে, তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন। আর শুধু শসা খাওয়া মাধ্যমেই ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। আপনাকে আরও বেশ কিছু দিক খেয়াল রাখতে হবে। যেমন বেশি বেশি ব‍্যায়াম করতে হবে, শাকসবজি বেশি খেতে হবে, চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

এর পাশাপাশি ওজন কমানোর জন্য আপনি নিয়মিত ছোট আকারের তিনটি শসা বা খিরা খেতে পারেন, আর বড় আকারের হলে দুইটি করে খেতে পারেন।

শসা খাওয়ার অপকারিতা

শসার কিছু অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক রয়েছে। এটি বেশি খেলে আপনি বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে পারেন। যেমন:
  • অনেক বেশি শসা খাওয়ার ফলে শরীরে সোডিয়াম এর পরিমাণ কমে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন।
  • শসা খেলে কিছু মানুষের অ্যালার্জি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় চেহারা ফুলে যাওয়া এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
  • আপনি যদি একসাথে অনেকগুলো শসা খান তাহলে আপনার ডায়রিয়া হতে পারে। কেননা শসাতে ফাইবার রয়েছে।

FAQ: শসা ও খিরার পার্থক্য - শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

১. শসা ও খিরার মধ্যে পার্থক্য কি?

উত্তর: শসা ও খিরা একই ধরনের ফল হলেও আকার আকৃতি এবং স্বাদ এর দিক থেকে এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। শসা সাধারণত লম্বা এবং মসৃণ ত্বকের হয়ে থাকে। শসা খেতে কিছুটা মিষ্টি এবং নরম হয়। আর খিরা কিছুটা গোল এবং শসার থেকে ছোট হয়। খিরার গায়ে ছোট ছোট ফোলা থাকে। আর এটি খেতে অনেক সময় তেতো হয়।

২. খিরা খেলেও কি শসার মতো উপকারিতা পাওয়া যাবে?

উত্তর: হ‍্যাঁ। খিরা খাওয়ার উপকারিতা এবং শসা খাওয়ার উপকারিতা প্রায় একই। শসা খেলে যেসব উপকারিতা লাভ হয় খিরা খেলেও সেসব উপকার গুলো পাওয়া যায়। সুতরাং আপনি যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন আপনার রুচি অনুযায়ী।

৩. শসা খাওয়ার সঠিক সময় কখন?

উত্তর: শসা খাওয়ার সঠিক সময় হল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সকালের শসা খেলে বেশি উপকার লাভ হয়। এছাড়া আপনি চাইলে দুপুরে খাবারের সাথেও শসার খেতে পারেন। অনেকের মতে রাতে শসা না খাওয়াই ভালো।

উপসংহার

শসা এবং খিরা আমরা কম বেশি সকলেই দেখেছি এবং খেয়েছি। আমাদের এই পোষ্ট করার পর আপনি হয়তো সম্পূর্ণভাবে শসা ও খিরার মধ্যে পার্থক্য কি তা বুঝতে পেরেছেন। শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো ভালোভাবে বুঝে সঠিক নিয়মে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত শসা খাবেন।

শসা ও খিরা বাজারে অনেক সহজলভ্য এবং যেকোনো সবজির বাজারে সহজেই পেয়ে যাবেন। সম্মানিত পাঠক আজকের এই পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। আর এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
2 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • নামহীন
    নামহীন ১৮ অক্টোবর, ২০২৪ এ ১১:২৬ AM

    Very nice. Thank you

    • Online Income IT
      Online Income IT ১৮ অক্টোবর, ২০২৪ এ ৪:৩৭ PM

      Thank you too

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অনলাইন ইনকাম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url