অধ্যবসায় রচনা - অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট
আজকের আর্টিকেলটি শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তুলে ধরা হচ্ছে। এখান থেকে এ রচনাটি দেখলে একজন শিক্ষার্থী অধ্যবসায় রচনা খুব সহজেই আয়ত্তে আনতে পারবে এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারবে।
রচনাটি যে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তা নয়। এখানে যে পয়েন্ট এবং ধাপগুলো তুলে ধরা হবে তা সকলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা অধ্যবসায় এমন একটা জিনিস যা শিক্ষার্থীদের ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে সকল পেশার মানুষের জন্যই এটি প্রয়োজন। একজন অধ্যবসায়ী মানুষ তার জীবনে সহজেই সফলতা আনতে পারে। আর অধ্যবসায় মেনে না চললে সফলতা পাওয়া অনেকটাই দুষ্কর। প্রত্যেক মানুষের জীবনে অধ্যবসায় থাকা অত্যন্ত জরুরী। কেন জরুরী সে বিষয়গুলোই এখন তুলে ধরা হবে। তবে অধ্যবসায় সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য জানবো।
মূলত কোনো কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়াকে বলা হয় অধ্যবসায়। অধ্যবসায় হলো ধৈর্য শক্তি এবং ইচ্ছা শক্তির সমন্বয়। আর এ দুটি সমন্বয় করে যদি একজন ব্যক্তি তার যেকোনো প্রয়োজনীয় কাজের প্রতি এগিয়ে যেতে পারে তাহলেই তার সফলতা আসবে খুবই তাড়াতাড়ি। আর প্রত্যেকের জন্য এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যবসায় রচনা
জীবনে সফল হতে চাইলে আজকের এই অধ্যবসায় রচনাটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। অধ্যবসায় এর মাধ্যমে অনেক কঠিন কাজ সহজ হয়ে যায়। মানুষের জীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অনেক বেশি।
জীবনে সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই হতাশ হওয়া যাবে না, জনপ্রিয় বিজ্ঞানী টমাস আলভার মতো শত শত বার চেষ্টা করলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। তিনি শত শত বার ব্যর্থ হয়েও হাল না ছেড়ে কাজ করে গিয়েছেন তাই তিনি বৈদ্যুতিক লাইট আবিষ্কার করতে পেরেছেন।
শিক্ষা ক্ষেত্রে অধ্যবসায় খুবই জরুরী একটি বিষয়। একজন শিক্ষার্থী যদি বারবার অধ্যয়ন না করে এবং পরিশ্রম না করে তাহলে সে কখনোই ভালো রেজাল্ট করতে পারে না। কেবলমাত্র শিক্ষা ক্ষেত্রেই নয় বরং জীবনের প্রত্যেকটি ধাপেই অধ্যবসায়ের প্রয়োজন রয়েছে। সহজ ভাবে বলতে গেলে অধ্যবসায় হচ্ছে সফলতা অর্জনের একমাত্র রাস্তা।
তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত অধ্যবসায়ী হয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া। নিচে অধ্যবসায় রচনা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা করব। অধ্যবসায় রচনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ২০ পয়েন্ট তুলে ধরা হলো।
অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট
ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে উচ্চতর ডিগ্রী পর্যন্ত অধ্যবসায় রচনা পড়ে থাকেন অনেকেই। কারণ এই সব শ্রেণীর পরীক্ষাতে এই অধ্যবসায় রচনা অনেক সময় আসে। তাই ভালো নম্বর পেতে শিক্ষার্থীরা একটি ভালো বই বা মাধ্যম থেকে শিখতে আগ্রহী হন। পাঠ্যপুস্তকে যে রচনা দেওয়া রয়েছে তা অনেকের কাছে যথেষ্ট মনে হয় না।
যারা আরও বড় এবং ভালো রচনা পড়তে চাচ্ছেন তারা এই আর্টিকেল থেকে পড়তে পারেন। এখানে মোট ২০ পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যা আপনার পরীক্ষাতে যথেষ্ট নম্বর পেতে সহায়তা করবে। অন্যদিকে শুধুমাত্র এটি শিক্ষার্থীদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ নয়।
যারা জীবনের সফলতা আনতে চান তারা অবশ্যই এই রচনাটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন। কারণ এখানে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং ভাব গুলো তুলে ধরা হয়েছে, যা আপনার জীবনের উন্নতির ক্ষেত্রে অতীব জরুরী বিষয়। চলুন এখন সরাসরি মূল প্রসঙ্গে চলে যাই।
সূচনা / ভূমিকা:
প্রতিটি মানুষ সফল হতে চান। সফল হতে চান না এমন মানুষ এ পৃথিবীতে নেই বললেই চলে। আর সকল ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের উদ্দেশ্যে দৃঢ় প্রচেষ্টা করার নামই হচ্ছে অধ্যবসায়। সফলতা এতটা সহজ নয়, যতটা আমরা মনে করি। জীবনে কিছু সময় বা বেশিরভাগ সময় ব্যর্থতা আসবেই। আর এই সকল ব্যর্থতা সহ্য করে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকাই হচ্ছে সফলতার মূলমন্ত্র। অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট এর ভেতর এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যবসায় কি:
মূলত কোনো কাজ বা সফলতার জন্য অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়াকেই অধ্যবসায় বলা হয়। তবে সেটি হওয়া উচিত অবশ্যই কল্যাণজনক এবং সৎ কাজ। কোনো ব্যক্তি যদি তার লক্ষ্যে অথবা গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য বারবার অবিরাম প্রচেষ্টায় অব্যাহত থাকে, তাহলে বুঝে নিবেন তার মধ্যে রয়েছে অধ্যবসায়। আর জীবনে সফলতার জন্য এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
যে যত বেশি ধৈর্য ধারণ করে সফলতার দিকে এগিয়ে যাবে তার নিকট সফলতাও সহজ হয়ে যাবে এবং অর্জন করতে সক্ষম হবে। কারণ বারবার ব্যর্থ হয়ে ভেঙে পড়লে তার নিকট সফলতা অর্জন করা এত সহজ হবে না। প্রতিটি ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়েই এগিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে।
অধ্যবসায়ের জন্য যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে ইচ্ছাশক্তি এবং মনোবল। যার যত ইচ্ছাশক্তি এবং মনোবল বেশি রয়েছে সে ততো বেশি সফল হবেন। অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট এর মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাত্র-ছাত্রী সহ সকলের জন্য।
অধ্যবসায়ের গুরুত্ব:
প্রত্যেকটি মানুষ তার কর্মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। সেটা হোক তার আয়ের উৎস কিংবা জীবনের অন্য কোনো অংশ। এই কর্ম প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়েই তারা সফলতা অর্জন করতে চান। আর এই সফলতার জন্য প্রয়োজন দারুণ প্রচেষ্টা। শুধুমাত্র অধ্যবসায়ের ইচ্ছা থাকলে হবে না, নির্দিষ্ট লক্ষ্য পৌঁছনোর জন্য প্রয়োজন হয় মানসিক শক্তি এবং অনুপ্রেরণা।
সফলতার জন্য এগিয়ে গেলে ব্যর্থতা আসবেই আর এই কথাটি মনে রাখতে হবে সবাইকে। কারণ ব্যর্থতাকে উপেক্ষা করে সফলতার দিকে যেতে হয়। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন ব্যর্থতা হচ্ছে সফলতার প্রথম সিঁড়ি।
পৃথিবীর অন্যতম সেরা ধনী ব্যক্তি বিল গেটস বলেছেন, "জীবনে বড় ধাক্কা খাওয়া, খারাপ পরিস্থিতির শিকার হওয়া, এগুলো হচ্ছে সাফল্যের অন্যতম মূলমন্ত্র।"
পৃথিবীতে যারা বর্তমানে সফল এবং উন্নতির চরম শিখরে উঠেছেন তাদের মূলে দেখা গিয়েছে এই অধ্যবসায়। আর তাদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে প্রাথমিক অবস্থায় ব্যর্থতার পরিমাণ ছিল অত্যন্ত বেশি। তারা এই সিঁড়ি পার করেই সফলতার মুখ তারা দেখেছেন।
ব্যক্তি জীবনে অধ্যবসায়:
ব্যক্তি জীবনে অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা বিভিন্ন ধাপ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন ব্যক্তি জীবনেও বিভিন্ন কাজের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। কেননা ব্যক্তি জীবনে মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যার সমাধান কাটিয়ে তুলতে মানুষ অধ্যবসায় করে থাকেন।
হাল না ছেড়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি অধ্যবসায়ী হয়ে উঠেন। আর যে ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত জীবনে অধ্যবসায়ী হন সে সকল কাজেই সফলতা পান।
ছাত্র জীবনে অধ্যবসায়:
ছাত্র জীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব আরও অনেক বেশি। কারণ ছাত্র জীবনের মাধ্যমে একজন মানুষের সূচনা ঘটে। এ সময়ে অধ্যবসায় চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় লেখাপড়ার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী জ্ঞান আহরণ করতে পারে। যখন সে বারবার চেষ্টার মাধ্যমে তার জ্ঞানকে বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে তখনই সে একজন অধ্যবসায়ী হয়ে উঠছে।
অর্থাৎ এটা একটি প্রাকৃতিক-ভাবে গড়ে ওঠে ছাত্র জীবনে। যার ফলস্বরূপ তারা পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে এবং পরবর্তী জীবনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যারা এ বারবার পাঠ অনুশীলন না করে তারাই তুলনামূলক-ভাবে পিছিয়ে থাকে। (অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী)। এজন্য দূর্বল শিক্ষার্থীদের সফলতা অর্জন করার লক্ষ্যে আজই অধ্যবসায় শুরু করতে হবে। তাহলে একদিন না একদিন সফল হতে পারবে।
সভ্যতার উন্নয়নে:
প্রাচীনকালে মানুষ বিভিন্ন গুহাতে বসবাস করত এবং তারা আধুনিক সভ্যতা থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল। বর্তমানে বিভিন্ন সভ্যতা এখন এগিয়ে গেছে অনেক পর্যায়ে অধ্যবসায়ের ফলে। যা এককালে অকল্পনীয় ছিল এমন অনেক কাজ তারা করে দেখিয়েছেন। তারা এমনি এমনি এতদূর এগিয়ে যেতে পারেনি এবং সভ্যতার পরিবর্তন করতে পারেনি।
তাদের কঠোর প্রচেষ্টা এবং ব্যর্থতাকে উপেক্ষা করেই তারা সফলতা পেয়েছেন। যে জাতি যত অধ্যবসায়ী হয়ে থাকে সে জাতি নিজেদের ততো উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়।
বিজ্ঞান বা গবেষণায় অধ্যবসায়:
পৃথিবীর সকল মানুষের সফলতার পেছনে রয়েছে অধ্যবসায়। কারণ কোনো কিছুই এমনিতে পাওয়া সম্ভব না। বিশেষ করে বিজ্ঞান এবং গবেষণার ক্ষেত্রে রয়েছে প্রচণ্ড অধ্যবসায়। মানুষের অধ্যবসায়ের মাধ্যমে বিজ্ঞান আজ এতো উন্নত। যারা অধ্যবসায়ের একটি উদাহরণ দেখতে চান তারা অবশ্যই বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানীদের গবেষণাগুলো খেয়াল করবেন।
তারা কয়েক যুগের বেশি সময় ধরে ব্যর্থ হয়ে প্রচণ্ড চেষ্টার মাধ্যমে সফলতার মুখ দেখেছেন অনেকেই। যার কারণে আমরা পেয়েছি এক আধুনিক বিশ্ব।
মনীষীদের জীবনে অধ্যবসায়:
যারা জীবনে মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পেয়েছেন তারা করেছেন আরও বেশি প্রচেষ্টা। বিশেষ করে মনীষীরা তাদের জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন, বারবার বিপদের মুখে পড়ে সেগুলো প্রতিহত করে তারপরেই তারা এই সফলতা পেয়েছেন। উৎকৃষ্ট উদাহরণের মধ্যে তারা অন্যতম। যেমন মহাকবি ফেরদৌসি অমর হয়ে আছেন শাহনামা নামের কাব্য প্রয়াসের জন্য।
তার এই সফলতা পাওয়ার জন্য সময় লেগেছে দীর্ঘ ৩০ বছর। আমরা যে কাব্যগ্রন্থ এবং পুথি-বিদ্যা দেখি তা এক দুই বছরে তৈরি করা হয়নি। যুগ যুগ সময় লেগে গিয়েছে এটি তৈরি করতে এবং তারপরে তারা (লেখকগণ) সফলতা পেয়েছেন।
জাতীয় জীবনে অধ্যবসায়:
শুধুমাত্র ব্যক্তিগত জীবনে এর প্রভাব এবং কার্যকারিতা প্রয়োগ করলে চলবে না। জাতীয় জীবনেও এর ব্যাপক ব্যবহার করতে হবে। কেননা যে জাতি যত উন্নত তার পিছনে দেখবেন মূলমন্ত্র হিসেবে রয়েছে অধ্যবসায়।
আর এর জন্য ব্যক্তিগত কাজের পাশাপাশি রাষ্ট্রের ভালোর জন্যও কাজ করতে হবে। যেমন অধ্যবসায় এর গুরুত্ব জনসাধারণকে বোঝাতে হবে এবং তাদেরকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে উৎসাহ প্রদান করতে হবে। এতে করে ব্যক্তিগত উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন ঘটবে। আর যে কোনো সমস্যার সমাধান খুব দ্রুত খুঁজে পাওয়া যাবে।
অধ্যবসায়ের মূল্য:
অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি। অর্থাৎ এর কতটা গুরুত্ব এবং মূল্য তা জানা অবশ্যই প্রয়োজন। মানব জীবনের যত বাধা বিপত্তি আসুক, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হলে অবশ্যই অধ্যবসায়ের প্রয়োজন হয়। হতে পারে সেটি কৃত্রিম বাঁধা কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
এই সকল বিপদে ধৈর্য ধারণ করে বারবার প্রচেষ্টার মাধ্যমে মোকাবেলা করতে হয়। যেমন বন্যা, ভূমিধ্বস, প্রচণ্ড ঝড়, নদী ভাঙ্গন ইত্যাদি সমস্যায় ভীত না হয়ে এ সকল অঞ্চলের মানুষেরা তা প্রতিহত করে। আর প্রতিবছর এ সকল অঞ্চলের মানুষ কঠোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে মোকাবেলা করে দীর্ঘ সময় ধরে টিকে আছেন।
আর এটি তাদের অধ্যবসায় এর মূল্য। অর্থাৎ তারা সুস্থ্য ভাবে পরবর্তী সময়গুলোতে জীবন যাপন করতে পারছেন। আর যারা এই মোকাবেলা করতে পারেনা তারা ব্যর্থ হয়ে হেরে যান। ফলস্বরূপ সম্পদ এমনকি জীবন পর্যন্ত অনেকে হারিয়ে ফেলেন।
প্রতিভা ও অধ্যবসায়:
মূলত প্রতিভা ও অধ্যবসায় এ দুটি হচ্ছে সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। কিন্তু যদি এ দুটির সমন্বয়ে ঘটে তাহলে একজন মানুষ পুরোপুরি ভাবে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে পারেন। কারণ একজন মানুষ যদি প্রতিভা দ্বারা বারবার প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় তাহলে সফলতা তার নিকটে চলে আসে।
সাফল্যের চাবিকাঠি:
যারা জীবনে সফলতা অর্জন করেছেন এবং এর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছেন, তারা সকলেই বলেছেন তাদের সফলতার পিছনে রয়েছে অধ্যবসায়। কেননা সামনে যত বাঁধা-বিপত্তি এসেছে, সেগুলো প্রতিহত করে সামনে এগিয়ে গেছেন আর তারপরেই তারা পেয়েছেন তাদের সফলতা। আর এইসব সফল ব্যক্তিরা বলে থাকেন যে, অধ্যবসায়-ই হলো সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
চর্চা:
অধ্যবসায় শুরু করলেই কেউ সহজেই সফল হতে পারবে বিষয়টা এমন নয়। তাকে এ বিষয়ে অবশ্যই চর্চা করতে হবে। তারপর যখন ধীরে ধীরে সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করবেন তারপরেই হয়ে যাবেন অধ্যবসায়ী। আর এর জন্য প্রয়োজন সময় এবং ধৈর্য। আর অধ্যবসায়ী হতে পারলেই সফল হওয়া যায়।
সফলতা:
সফলতা এবং অধ্যবসায় পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত। কারণ সফলতা পেতে হলে অবশ্যই অধ্যবসায় দরকার। আর যারা অধ্যবসায়ী তাদের কাছে অবশ্যই সফলতা চলে আসে কোনো একদিন। তাই এ দুটি বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।
অধ্যবসায়হীন ব্যক্তির পরিণাম:
যারা কোনো বিষয়ে চর্চা করে না কিংবা প্রচেষ্টা করে না তাদের জীবনের সফলতা আসে না। পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যে অধ্যবসায় ছাড়া সফলতা পেয়েছেন। হয়তো কেউ অর্থ-সম্পদ পৈতৃক সূত্রে পেয়েছেন কিংবা কোনো অবৈধ উপায়ে। কিন্তু অধ্যবসায় ছাড়া এগুলো টিকিয়ে রাখাও খুব কঠিন।
এমনকি অনেকেই বিত্তশালী হয়েও অধ্যবসায় না থাকার কারণে সকল কিছু হারিয়েছেন। এমনকি অনেক রাজাও তার রাজত্ব হারিয়েছেন।
আত্মবিশ্বাস:
মানুষের জীবনে আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন রয়েছে অনেক বেশি। যারা আত্মবিশ্বাসী হন তাদের অবশ্যই সফলতা আসে। আর যারা অধ্যবসায়ী হতে চান তাদের আত্মবিশ্বাস থাকে। যার কারণে তারা বারবার প্রচেষ্টার মাধ্যমে অধ্যবসায়ী হয়ে উঠেন। যার উদাহরণ পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোসফট কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস।
প্রয়োজনীয়তা:
যারা শুধুমাত্র জীবনে সফলতা চান তাদের জন্য অধ্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ, বিষয়টি এমন নয়। প্রতিটি বিপদ মোকাবেলার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর অতি প্রয়োজনীয় একটি মাধ্যম। অর্থাৎ জীবনে সাধারণ ভাবে চলাফেরা করতে গেলেও এর গুরুত্ব রয়েছে অনেক বেশি। কেননা এটি না থাকলে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়, এমনকি জীবন, সম্পদও হারাতে হয়।
বৈশিষ্ট্য:
প্রত্যেক বিষয়বস্তুর যেমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে ঠিক তেমনি ভাবে অধ্যবসায়ীদের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কারণ এটি একক কোনো বিষয় নয়। যেকোনো সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে অথবা লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অবশ্যই প্রচেষ্টার পাশাপাশি দরকার ইচ্ছে শক্তি, আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম এবং সৎ মাধ্যম। এ সকল বৈশিষ্ট্য নিয়েই অধ্যবসায় তৈরি।
শিক্ষা:
মানব জীবনে যে ব্যর্থতা থাকবে না এমনটা নিশ্চিত নয়। কিন্তু ব্যর্থতাকে উপেক্ষা করে বারবার চেষ্টা করে সফলতা পাওয়ার নামই হচ্ছে অধ্যবসায়। হাল ছাড়া যাবেনা, এটাই অধ্যবসায়ের মূল শিক্ষা এবং চিন্তা ধারা। যার কারণে অধ্যবসায়ীদের সফলতার পরিমাণ থাকে অত্যন্ত বেশি। আর সফল না হলেও তারা একেবারে ব্যর্থ হয়ে পড়ে না। তারা ধার-প্রান্তে গিয়ে সফলতার সুখ উপভোগ করতে পারে।
উপসংহার:
ব্যক্তিগত জীবনে কিংবা জাতীয় জীবনে সফলতা আনতে হলে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। আর লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য মানসিক চেষ্টা, আত্মবিশ্বাসী এবং সঠিক নিয়ম অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরী। তাহলে একজন ব্যক্তি কিংবা রাষ্ট্র উন্নয়নের চরম শিখরে উঠতে পারবে। সমাজে চলার পথে বা যেকোনো কাজে আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, আর এটাই স্বাভাবিক।
আর জীবনে চলার পথে এ সকল সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় হচ্ছে অধ্যবসায়। যে সকল মানুষ কোনো প্রচেষ্টা ছাড়াই হাল ছেড়ে দেয় সে কখনও অধ্যবসায়ী হতে পারে না। আর যে সকল মানুষ সফলতা অর্জনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যায় সে সকল মানুষই প্রকৃত অধ্যবসায়ী। আর তারাই হলেন সফল ব্যক্তি।
লেখকের মন্তব্য
মানুষের জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য অধ্যবসায়ের কোনো বিকল্প নেই। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য যদি কোনো মানুষের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে তাহলে সে কখনোই হেরে যাবে না। তার বিজয় একদিন না একদিন অবশ্যই হবে। কেননা অধ্যবসায় একসময় সফলতা নিয়ে আসে।
সম্মানিত পাঠক এই ছিল অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট নিয়ে পরিপূর্ণ একটি প্রতিবেদন। আশা করি শিক্ষার্থীরা এই রচনাটি ভালোভাবে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন এবং সহজে আয়ত্ব করে নিতে পেরেছেন। শুধুমাত্র শিক্ষার্থী না যারা জীবনের সফলতা চান তারাও এই পয়েন্টগুলো অনুসরণ করবেন।
আমাদের এই অধ্যবসায় রচনা সম্পর্কে আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিবেন। আর ভালো লাগলে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন আপনার বন্ধুদের সাথে। যাতে তারাও অধ্যবসায়ী হতে পারে।
FAQ: অধ্যবসায় রচনা - অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
১. অধ্যবসায় মানে কি?
উত্তর: অধ্যবসায় মানে হলো নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যে বা গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য নিয়মনীতি মেনে অনেক বেশি ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করে কাজ চালিয়ে যাওয়া, যতক্ষণ না পর্যন্ত নিজের গন্তব্যে পৌঁছানো যায়। মানব জীবনের সাফল্য পেতে হলে অধ্যবসায়ী হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
২. অধ্যবসায় এর উদাহরণ কি?
উত্তর: অধ্যবসায় এর কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো:
- ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো অধ্যবসায় এর মাধ্যমে পৃথিবী বিখ্যাত ফুটবলারদের মধ্যে একজন হয়ে উঠেছেন। তার ভাষ্যমতে পরিশ্রম ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব নয়।
- রবার্ট দ্য ব্রুস যুদ্ধে বারবার হয়ে যান, অতঃপর একটি গুহায় লুকান। একটি মাকড়সা থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে অধ্যবসায়ী হতে পেরেছিলেন এবং যুদ্ধে জয়লাভ করতে পেরেছিলেন।
- বিজ্ঞানী থমাস এডিসন বহুবার বিদ্যুৎ আবিষ্কারের জন্য ব্যর্থ হওয়ার পরেও হাল ছাড়েননি এবং পরবর্তীতে তিনি সফল হন অধ্যবসায় এর মাধ্যমে।
৩. অধ্যবসায়ের অভাবে মানব জীবনে কি ধরনের প্রভাব পড়তে পারে?
উত্তর: অধ্যবসায়ের অভাবে মানুষ সকল দিক থেকে পিছিয়ে পড়ে। জীবনে কোন উন্নতি করতে পারে না এবং সাফল্যের মুখ দেখার সৌভাগ্য হয়না। শুধু হতাশা এবং ক্লান্তি তাকে গ্রাস করতে থাকে।
অনলাইন ইনকাম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url