ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা ১০টি জেনে নিন
ইন্টারনেট কি - ইন্টারনেটের সুবিধা ও অসুবিধাজনপ্রিয় সকল ডিজিটাল প্রযুক্তির মাঝে অন্যতম একটি হচ্ছে ই-কমার্স। আজকে এই আর্টিকেলে ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আর এই সম্পর্কে খুঁটিনাটি অন্যান্য বিষয়গুলো আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে এখন।
বর্তমান সময়ের প্রযুক্তির অন্যতম একটি আশীর্বাদ হচ্ছে ই-কমার্স। যা বর্তমান বিশ্বে প্রায় সকল দেশে বিদ্যমান রয়েছে। ইন্টারনেট কিংবা বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি এখন সফল ব্যবসা কিংবা একটা দেশের উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের দেশেও এর বিস্তার ঘটেছে অনেক বেশি। চলুন এখন আমরা আগে জেনে নেই এই প্রযুক্তি কি এবং কিভাবে ব্যবহার করা হয়।
ই-কমার্স কি
ই-কমার্স এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স কমার্স। বাংলায় বলতে গেলে এটি ইলেকট্রনিক্স বাণিজ্যকে বুঝায়। ইন্টারনেট বা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবসা বাণিজ্য করাকেই বলা হয় ই-কমার্স। বর্তমানে এই ধরনের বাণিজ্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং চলমান রয়েছে।
এই ধরনের বাণিজ্য করতে গেলে যে বিষয়টি প্রথমে প্রয়োজন হবে সেটি হচ্ছে ইন্টারনেট সংযোগ এবং ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস। যার মাধ্যমে ব্যবসা প্রসার এবং সম্প্রচার করা হয়ে থাকে।
ই-কমার্স এর বৈশিষ্ট্য
প্রত্যেক বিষয়বস্তুর রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য, যার মাধ্যমে এটি গঠিত হয় এবং এর কার্যক্রমও চলমান থাকে। এই ধরনের ব্যবসার প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রচার প্রসারণ কিংবা বিক্রির কাজে অনলাইন প্লাটফর্ম গুলো ব্যবহার করা। হতে পারে সেটি ফেসবুক, ওয়েবসাইট, ইউটিউব কিংবা ইনস্টাগ্রাম সহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম।
প্রথমে এই সকল প্ল্যাটফর্মে পণ্য কিংবা সার্ভিস প্রদর্শন করাতে হবে। এই সকল সার্ভিস বা পণ্য সম্পর্কে ক্রেতারা পূর্ণ ধারণা পাবেন। এরপর এখান থেকেই তারা সেগুলো কিনতে পারবেন। আর এর জন্য অনলাইনে কিংবা অফলাইনে পেমেন্ট করতে হয়।
তবে বর্তমান সময়ে অনলাইন পেমেন্টের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ ক্যাশব্যাক অফার সহ দুর্দান্ত নানা ধরনের অফার থাকে অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম গুলোতে। এখানে ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা দুটোই রয়েছে। তবে সুবিধার পরিমাণটাই বেশি এখানে।
এ প্ল্যাটফর্মে দৈনন্দিন জীবনের খাবার এবং ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকে শুরু করে ডিজিটাল প্রযুক্তি গুলোও কেনাবেচা করা সম্ভব। ডিজিটাল প্রযুক্তি বেচাকেনা করা সম্ভব হয় একমাত্র ই-কমার্সের ফলে। যেমন অনলাইন সার্ভিস, সফটওয়্যার এবং বিভিন্ন ধরনের জিনিস পত্র সহ ইত্যাদি অনেক কিছু বিক্রি করা যায় ই-কমার্সের মাধ্যমে।
বর্তমানে এ সকল বিজনেস বেশি চলছে আমাদের দেশসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বে। শুধু তাই নয়, এ প্ল্যাটফর্ম এখন সবার উপরে রয়েছে।
ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা
এখন আপনাদের কাছে উপস্থাপন করা হবে এই ধরনের প্লাটফর্মের সুবিধা এবং অসুবিধা উভয় সম্পর্কে। তবে এর মধ্যে সুবিধার পরিমাণটাই অনেক বেশি। চলুন জেনে নেই সুবিধা-অসুবিধা উভয় সম্পর্কেই।
ই-কমার্স এর সুবিধা
ই-কমার্স এর অনেক সুবিধা রয়েছে। যে কোনো কিছু কেনার জন্য অথবা ব্যবসা করার জন্য এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেই ই-কমার্স এর সুবিধা গুলো সম্পর্কে:
কম খরচে ব্যবসা পরিচালনা
এই ধরনের ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে খুব কম খরচে পরিচালনা করা সম্ভব। যেমন ফিজিক্যালি যদি একটি দোকান নেওয়া হয়ে থাকে তাহলে সেখানে ইনভেস্ট করতে হয় কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত। শুধু তাই নয় ভালো পজিশন অনুসারে দোকান ভাড়া দিতে হয় পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু এ ধরনের ব্যবসায় কোনো ধরনের ফিজিক্যাল দোকানের প্রয়োজন হয় না।
শুধুমাত্র আপনার প্রয়োজন একটি ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অ্যাকাউন্ট। হতে পারে সেটি একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কিংবা Instagram একাউন্ট। আবার হতে পারে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট যা তৈরি করতে খরচ হয়ে থাকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। যার কারণে এখান থেকে খরচ অনেকাংশ কমে যায়।
শুধু তাই নয় এছাড়াও অতিরিক্ত লোক কিংবা ডেকোরেশনের কোনো ধরনের খরচ হয় না। যে কারণে যারা নতুন উদ্যোক্তা তাদের এক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না। নতুন অনেক উদ্যোক্তা রয়েছে যারা ইনভেস্টমেন্ট করতে অক্ষম।
তাই তারা একটি ইকমার্স সাইট অল্প খরচেই তৈরি করে নিতে পারেন। এছাড়াও বিদ্যুৎ বিল, পণ্য ড্যামেজ কিংবা দোকানের কারণে পণ্যের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় না।
অল্প পুঁজিতে বেশি পণ্য
যারা ব্যবসা করতে চান তাদের প্রধান যে সমস্যা দেখা যায় সেটি হচ্ছে পুঁজি। অর্থাৎ মূলধনের অভাবে তারা অনেকগুলো প্রোডাক্ট কিনতে পারেনা যার কারণে বিক্রির পরিমাণ কম থাকে, একই সঙ্গে তাদের আয়ের পরিমাণও অত্যন্ত কম থাকে।
বেশিরভাগ দোকানগুলোতে দেখা যায় তারা অতিরিক্ত পণ্য তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের লোণ বা ধার দেনা করতে হয়। যা তাদের জন্য একটি বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা উভয় দিক থাকলেও এদিকে রয়েছে ব্যাপক সুবিধা। কারণ অল্প প্রোডাক্ট নিয়ে এখানে কাজ শুরু করা যায়।
মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রোডাক্ট হাতে না থাকলেও এখান থেকে প্রচুর পণ্য বিক্রি করা সম্ভব। কারণ পণ্য কাস্টমার চাওয়া মাত্রই তাদেরকে পণ্য দিতে হয় না। প্রোডাক্টের ছবি এবং সকল তথ্য ওয়েবসাইট কিংবা পেইজে প্রথমে দিতে হয়। কেউ পণ্য অর্ডার নেওয়ার পর পণ্য গুলো দ্রুত সংগ্রহ করে তারপর ডেলিভারি দেওয়া যায়।
যার কারণে পণ্য কিনে স্টকে রাখার ঝামেলা নেই। যখন যে পণ্যের বা সার্ভিসের অর্ডার আসবে তখন সেটি সংগ্রহ করে তারপর ডেলিভারি দিলে তেমন বেশি পুঁজির প্রয়োজন হয় না।
ব্যবসায় বেশি সময় দেওয়া
এ ধরনের ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি সময় দেওয়া যায়। কারণ হাতে যদি একটি স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটার ডিভাইস থাকে তাহলে যে কোনো জায়গায় বসে এটি পরিচালনা করা সম্ভব। কারণ মোবাইলের মাধ্যমে এটি যে কোনো জায়গা থেকে অপারেট করা যায়। তাই অর্ডার কারেকশন করে তারপর পরবর্তী সময়ে দ্রুত ডেলিভারি করলেই এ কাজ আপনার জন্য একদম সহজ হয়ে যাবে।
আর একই সঙ্গে দিনরাত 24 ঘণ্টা এবং সপ্তাহের সাত দিন সার্ভিস দেওয়া সম্ভব। কারণ এ ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম বা আইন নেই। চোর ডাকাতের ভয় নেই যার কারণে সব সময় এটি খোলা রাখা যায়। আর কাস্টমাররা যেকোনো সময় অর্ডার করতে পারেন যার ফলে কাস্টমার দিন দিন বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সাধারণ দোকানের চেয়ে সেলের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
ক্রেতার পরিমাণ বৃদ্ধি
এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে ক্রেতার কোনো নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা নেই। যেমন কোনো জায়গায় যদি ফিজিক্যালের দোকান থাকে তাহলে ঐ এলাকা বা আশেপাশের অঞ্চল গুলোর ক্রেতারা এসে পণ্য বা সেবা কিনে থাকেন।
কিন্তু এই (ই-কমার্স) ধরনের ব্যবসায় সারা বাংলাদেশ এমনকি সারা বিশ্বজুড়ে এদের ক্রেতা থাকে। কারণ এদের মার্কেটিং এবং বিস্তার অনুসারে যতদূর পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব তারা যেতে পারেন। যার কারণে এখানে ক্রেতা বেশি হয়ে থাকে আর পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে সবচেয়ে বেশি। বেশ কয়েকটি জরিপে দেখা গিয়েছে সাধারণ দোকানের চেয়ে একটি ই-কমার্স বিজনেসে বিক্রির পরিমাণ থাকে প্রায় কয়েক গুণ।
রিপিট কাস্টমার
এখানে রিপিট কাস্টমারের পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়। আপনার প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস যদি ভাল হয় তাহলে ওই কাস্টমার বারবার পণ্য অর্ডার করবেন। আর তাদেরকে নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আটকে রাখা সম্ভব। কারণ নতুন নতুন পণ্যের অফার তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া যায় এবং তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনার জন্য আগ্রহী করা সম্ভব হয়।
যার কারণে এক কাস্টমার বারবার পণ্য অর্ডার করে থাকেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই পণ্যের কোয়ালিটি ও সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে। আর সকল কাস্টমারের কাছ থেকে রিভিউ সংগ্রহ করলে নতুন কাস্টমারগুলো পণ্য কিনতে আগ্রহী হন এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আর এটি ব্যবসার অগ্রগতির জন্য অন্যতম একটি মার্কেটিং পদ্ধতি।
গ্রাহকদের সুবিধা
এখানে ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে তা কিন্তু নয়। এখানে গ্রাহকদের ও প্রচুর পরিমাণে সুবিধা রয়েছে। কেননা এখানে তারা ঘরে বসেই যেকোনো পণ্য অর্ডার করতে পারছেন এবং বাসায় হাতে পেয়ে যাচ্ছেন।
শুধুমাত্র মোবাইলে কিংবা কোনো ইন্টারনেট সংযুক্ত ডিভিডিতে এটি অর্ডার করা সম্ভব দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে। শুধু তাই নয় দেশের বাইরে থেকেও এ পদ্ধতিতে পণ্য কেনা সম্ভব হয়ে থাকে। এতে করে গ্রাহকের সময় এবং অর্থের সাশ্রয় হয়ে থাকে।
ই-কমার্স এর অসুবিধা
অন্যান্য বিষয় এবং সার্ভিসের মতো এখানে রয়েছে বেশ কিছু অসুবিধা। আসুন আমরা দেখে নেই কি কি ধরনের অসুবিধা রয়েছে এখানে।
নিরাপত্তা জনিত ইস্যু
এটি সাধারণত অনলাইন একটি প্ল্যাটফর্ম। এখানে নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকে। কেননা বিভিন্ন সময় হ্যাকিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুক পেজ সহ ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম। আবার কাস্টমার বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে যান।
লেনদেনের ক্ষেত্রে অনেক জটিলতা সৃষ্টি হয়ে থাকে যার কারণে উভয়েই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর বর্তমান সময়ে হ্যাকার এবং ফ্রডদের পরিমাণ বেশি হয়ে গিয়েছে। যার কারণে কাস্টমারদের তথ্য চুরি হওয়ার ভয় থাকে।
টেকনিক্যাল সমস্যা
এটি সম্পূর্ণ ইন্টারনেট নির্ভর একটি প্ল্যাটফর্ম। এখানে ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিভিন্ন কারণে। এছাড়াও নির্দিষ্ট লিমিটেশন থেকে যায় যার কারণে মাঝে মাঝেই টেকনিক্যাল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
অনেক সময় এগুলো সমাধানের জন্য কয়েক দিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়। অন্যদিকে বিভিন্ন বিভিন্ন প্লাটফর্মের অ্যাকাউন্ট গুলো নষ্ট হয়ে যায় কিংবা হ্যাকিং এর শিকার হয়ে যায়। আর এ কারণেই ব্যবসায় বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের কপিরাইট সমস্যা বেশি হচ্ছে এ সকল প্লাটফর্মে।
কাস্টমার বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা
এখানে কাস্টমারদের প্রথমে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে হবে যে, আপনি সার্ভিস সততার সঙ্গে দিচ্ছেন। প্রোডাক্টের কোয়ালিটি ভালো এ সকল বিষয়ে তাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে। কেননা অনলাইনে প্রচুর পরিমাণে ভয় রয়েছে ই-কমার্স ওয়েবসাইট নিয়ে। যারা কাস্টমারদের থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে পণ্য দেয় না কিংবা পণ্য দিলেও অরিজিনাল প্রোডাক্ট দেয় না।
যার কারণে ই-কমার্স সাইট গুলো থেকে বিশ্বস্ততা উঠে গিয়েছে অনেকের কাছে। আর কাস্টমারদের বিশ্বস্ততা অর্জন করা অনেক সময়ের ব্যাপার এবং মার্কেটিং পদ্ধতি জানা প্রয়োজন।
ডেলিভারি জনিত সমস্যা
ডেলিভারি নিয়ে ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা উভয় রয়েছে। কারণ সঠিকভাবে ডেলিভারি না দেওয়ার কারণে পণ্য বিক্রি বেশি হয়ে থাকে আবার ডেলিভারি নিয়ে অনেক সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে ডেলিভারি চার্জ নিয়েও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় ব্যবসায়ীদের এবং কাস্টমারদেরও।
কাস্টমারদের কাছ থেকে ডেলিভারি চার্জ নেওয়া হলে কাস্টমাররা পণ্য কিনতে আগ্রহী কম হন। কারণ কম দামের একটি পণ্যের সাথে ডেলিভারি চার্জ নেওয়া হলে সব মিলিয়ে খরচ অনেক বেশি হয়। যার কারণে বিক্রির উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
আবার অনেক সময় ব্যবসায়ীরা ডেলিভারি চার্জ দিলেও পণ্য ব্যাক আসে। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। ই-কমার্স ব্যবসার মধ্যে এটি সবচেয়ে জটিল এবং সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। আর বর্তমানে এটি সবচেয়ে বেশি হচ্ছে।
ই-কমার্স কত প্রকার ও কি কি?
এই বিজনেস এর তিনটি প্রকার রয়েছে। আর এই প্রকার কি কি এবং কাকে বলে তা নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো।
১. বিজনেস টু বিজনেস: এই ধরনের পদ্ধতি হচ্ছে একজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যখন অন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সেবা বা পণ্য দিয়ে থাকে। যেমন একটি বড় কাঁচামালের ব্যবসায়ী কোনো নির্দিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানে কোনো পণ্য সেবা দিয়ে থাকেন।
২. বিজনেস টু কনজিউমার: মূলত এই পদ্ধতিতে একজন ব্যবসায়ী কিংবা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সরাসরি গ্রাহকের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি করে। এই ধরনের ব্যবসা করে থাকে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ই-কমার্স ওয়েবসাইট গুলো যেমন দারাজ, অ্যামাজন এবং অন্যান্য ওয়েবসাইট।
৩. কনজিউমার টু কনজিউমার: এই ধরনের মডেলে একজন সাধারণ মানুষ অর্থাৎ একজন সাধারণ ক্রেতা অন্য একজন সাধারণ ক্রেতার কাছে পণ্য সেবা বিক্রি করে।
FAQ: আর্টিকেল সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
১. ই-কমার্স এর সুবিধা গুলো কি কি?
উত্তর: ই-কমার্স এর প্রধান সুবিধা গুলো হলো:
- যেকোনো সময় যে কোনো জায়গা থেকে পণ্য কেনা যায়।
- একসাথে অনেক পণ্য পেয়ে যাবেন এবং ইচ্ছা মতো পণ্য বেছে নিতে পারবেন।
- বিভিন্ন অফারে কম দামে প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন।
- সহজে পণ্যের বিবরণ এবং মূল্য জানা যায়।
- যেকোনো প্রোডাক্টের কাস্টমার রিভিউ দেখে যাচাই-বাছাই করা যায়। এতে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয়।
- এই মাধ্যমে পণ্য কিনলে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়, যা ক্রেতাদের জন্য খুবই উপকারী।
২. ই-কমার্স এর অসুবিধা গুলো কি কি?
উত্তর: ই-কমার্স এর কিছু অসুবিধা রয়েছে। প্রধান অসুবিধাগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
- অনেক সময় পণ্যের ছবির সাথে পণ্যের মান মিলে না।
- আগে পেমেন্ট করার কারণে অনেক সময় প্রতারণার শিকার হতে হয়।
- কোনো কোনো সময় পণ্য হাতে পেতে অনেক দেরি হতে পারে। বিশেষ করে সরকারি ছুটির সময়।
- অর্ডার করা পণ্য ফেরত দিতে বা পরিবর্তন করতে জটিল সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
৩. ই-কমার্স এর ভবিষ্যৎ কি?
উত্তর: ই-কমার্স এর ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল কেননা এটির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। সহজ প্রক্রিয়া হওয়ার কারণে ভবিষ্যতেও এর চাহিদা বাড়তে থাকবে বলে ধারণা করা যায়।
উপসংহার: ই-কমার্স কি - ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা
ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই অসুবিধা গুলো পরিহার করতে হবে এবং এর সমাধান করলেই এ প্লাটফর্ম আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে। মানব জীবন অত্যন্ত সহজ হবে এবং অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
সম্মানিত পাঠক আপনি জানতে পারলেন ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা ই-কমার্স কি এবং ই-কমার্স এর বৈশিষ্ট্য ই-কমার্স কত প্রকার ও কি কি সে সম্পর্কে। এসব বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের কে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে প্রশ্ন করে জানিয়ে দিবেন।
Nice