আপনি এখন কোথায় আছেন বিস্তারিত জেনে নিন
কিভাবে আমি এখন কোথায় আছি, আমি এখন কোন গ্রামে আছি, আমি এখন কোন থানায় আছি, আমি এখন কোন জেলায় আছি, আমার জায়গার নাম কি সেটি বের করা যায় সে সম্পর্কে যদি জানতে চান, তাহলে এই আর্টিকেল থেকে তা জানতে পারবেন।
এছাড়া আজকে আমার জানাব কিভাবে আপনি একই সঙ্গে রোড ম্যাপ লোকেশন বের করার নিয়ম এবং My Location Share বিষয়টিও শিখতে পারবেন। যা আপনার কাজে লাগবে যে কোনো সময়। গুগল ম্যাপের মাধ্যমে নিজের লোকেশন কিভাবে বের করতে হয় তা জানতে মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
সূচিপত্র: আমি এখন কোথায় আছি - আপনি এখন কোথায় আছেন জেনে নিন
.
ভূমিকা
প্রথমে জেনে নেই লোকেশন কি। লোকেশনে একটি ইংরেজি শব্দ যার বাংলা শব্দ হচ্ছে অবস্থান। প্রাচীন যুগে নয় দুই যুগ আগেও মানুষ যখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেত তখন পথ হারিয়ে ফেলত। কিংবা অজানা জায়গায় গেলে নিজের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারত না।
বিশেষ করে যারা ভ্রমণ পিপাসু তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হতো। তারা কতদূর পর্যন্ত এসেছেন। আবার কোথায় অবস্থান করছেন সে সময়ে তা জানা থাকতো না। যার কারণে সময় এবং অর্থের দুটোরই অপচয় হতো।
কারণ তারা পরবর্তী পদক্ষেপ কি গ্রহণ করতে চাচ্ছে তার যথাযথভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন না। এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে পথ হারিয়ে মানুষজন দিশেহারা হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমান সময়ে খুব সহজেই এটি করা যায়। কারণ আমার লোকেশন কোথায় তা জানা মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার। অর্থাৎ পূর্বের মতো কোন ধরনের ঝামেলা নেই।
শুধুমাত্র আপনার হাতে একটি মোবাইল অথবা ইন্টারনেট সংযুক্ত ডিভাইস থাকলে হবে। কেননা এখন বেশিরভাগ ইন্টারনেট সংযুক্ত ডিভাইসগুলোতে লোকেশন রয়েছে। যা দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে আপনার অবস্থান জানতে পারবেন। আর কিভাবে এগুলো দেখবেন তাই নিয়ে আজকের এই আলোচনা।
আমি এখন কোথায় আছি বের করব কিভাবে?
প্রথমত বিষয় হচ্ছে এর জন্য কিছু ডিভাইসের প্রয়োজন হবে। কারণ এ সকল ডিভাইস ছাড়া আপনি একা একা জানতে পারবেন না। অবশ্যই আপনার কাছে কোনো মোবাইল, ট্যাব অথবা ল্যাপটপ থাকতে হবে। আর এগুলোতে ইন্টারনেট সংযুক্ত থাকলে যে কোনো মুহূর্তে লোকেশন বের করা যায়।
তবে ইন্টারনেট ছাড়াও বিশেষ কিছু মোবাইল এবং ডিভাইসেও এই লোকেশন গুলো বের করা সম্ভব। প্রথমত হচ্ছে লোকেশন বের করার জন্য এ সকল ডিভাইস থাকতে হবে আপনার কাছে। তারপর আপনি এ সকল লোকেশন বের করতে পারবেন।
How To Find My Location By Google Map
নিজের লোকেশন বের করার জন্য বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় অ্যাপ এর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে গুগল ম্যাপ। এটি বিশেষ করে এন্ড্রয়েড মোবাইলে ডিফল্ট হিসেবে দেওয়া থাকে। কিছু কিছু মোবাইলে Google Map, আবার কিছু মোবাইলে Location নামে অ্যাপ থাকে।
আর যদি আপনার মোবাইলে এই অ্যাপটি না থাকে তাহলে প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে পারেন। কারণ প্লে স্টোরে সার্চ দিলেই এটি পাবেন খুব সহজে। আর সেখান থেকে ইন্সটল করে নিবেন। এখন নিচের ধাপ অনুসরণ করে আমি এখন কোথায় আছি তা বের করুন।
অ্যাপটি ওপেন করতে হবে। আর এই অ্যাপটি ওপেন করার পর বেশ কয়েকটি অ্যাক্সেস চাইবে আপনার থেকে। সকল অ্যাক্সেসগুলো অন করুন। একই সঙ্গে সঙ্গে ডিভাইস থেকে মাই লোকেশন অন করুন।
অ্যাপ এ প্রবেশ করার পর নিচের ছবির মতো আসবে। এরপর ছবিতে মার্ক করা যে আইকন দেখতে পারছেন আপনারা, এ মার্ক করা অপশন আপনারা দেখতে পারবেন।
এবার এই অপশনটিতে প্রেস করতে হবে। প্রেস করলে সেখানে আপনার মোবাইলের লোকেশন অন করার পারমিশন চাইবে। আর পারমিশন Ok করে দিতে হবে।
এটি অন করার পর আবার ঐ অপশনে চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার লোকেশন দেখাবে ম্যাপে। যদি আপনার ওই লোকেশনে কোনো নাম না দেখায় কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠান না দেখে থাকে তাহলে আশেপাশের যে জায়গার নাম দেখাচ্ছে তা দেখুন। অথবা জুম করে দেখতে হবে তাহলে আপনার লোকেশন কোথায় তা দেখতে পারবেন।
উপরের এই মাধ্যমেই খুব সহজেই নিজের লোকেশন খুঁজে বের করা সম্ভব। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। চলুন সেগুলোও দেখি আমরা।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে লোকেশন ট্র্যাক
মোবাইল অ্যাপসের পাশাপাশি ওয়েবসাইটে ব্রাউজ করে এই লোকেশন বের করা যাবে। এজন্য প্রথমে তাদের প্রবেশ করতে হবে google.com/maps এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এখানে প্রবেশ করার পর দেখতে পারবেন My Location নামের একটি অপশন। এবার এখানে প্রবেশ প্রেস করতে হবে।
উক্ত অপশনে প্রেস করার পর ডিভাইস লোকেশন এর অ্যাক্সেস দিতে হবে। এটি অ্যাক্সেস দিলেই আপনার লোকেশন দেখাবে। আপনি কোথায় আছেন সেটি ম্যাপে দেখাবে এবং সে অঞ্চলের নাম আপনার সামনে তুলে ধরা হবে।
লোকেশন শেয়ার করার নিয়ম
যখন আমি এখন কোথায় আছি বের করবেন। তখন আপনার লোকেশন শেয়ার করারও প্রয়োজন হবে বিভিন্ন কারণে। কারণ অনেকের সাথে এগুলো শেয়ার করতে হয় যাতে করে একে অপরকে খুঁজে পাওয়া যায় খুব সহজে। কিংবা প্রয়োজনে শেয়ার করা হয়ে থাকে বিভিন্ন কাজে। যাইহোক কিভাবে শেয়ার করবেন তা নিচে দেওয়া হলো:
এজন্য উপরের নিয়ম অনুসারে নিজের লোকেশন বের করে নিতে হবে। তারপর উপরে দেখা যাবে জি মেইল একাউন্টের আইকন। সেখানে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার পর নিচের ছবির মতো দেখতে পারবেন Share করার মতো অপশন।
তারপর আপনি যার সাথে শেয়ার করবেন তার মোবাইল নম্বরে, ফেসবুক আইডিতে, হোয়াটসঅ্যাপে অথবা টেলিগ্রামে পাঠিয়ে দিতে পারবেন। আর এভাবে মূলত লোকেশন শেয়ার করতে হয়। এই পদ্ধতিতে যে কারো সাথে শেয়ার করতে পারবেন যে কোনো মাধ্যমে।
লোকেশন শেয়ারের প্রয়োজনীয়তা
এখন কথা হচ্ছে এই লোকেশন গুলো কেন শেয়ার করা হয়ে থাকে বা শেয়ার করার প্রয়োজন হয়। আর একই সঙ্গে জানাবো লোকেশন জানার প্রয়োজন কেন হয় সে বিষয়টি।
অপরিচিত জায়গায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে: আমরা অনেক সময় বিভিন্ন কাজে কিংবা ঘুরতে বিভিন্ন নতুন জায়গায় ভ্রমণ করে থাকি। সে ক্ষেত্রে অনেক সময় বিড়ম্বনায় পড়তে হয় যে কোনো জায়গায় বর্তমানে অবস্থান হচ্ছে। আশেপাশের জনবল কিংবা মানুষ থাকলে সেখান থেকে জানা সম্ভব হয়।
কিন্তু এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে খুব সহজে কাউকে দেখা যায় না বা জানা সম্ভব হয় না। তখন এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন।
ডেলিভারির ক্ষেত্রে: বিশেষ করে যারা বিভিন্ন পণ্য ডেলিভারি করেন। তাদের গ্রাহকদের অনেক সময় লোকেশন শেয়ার করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। যাতে করে খুব দ্রুত তাদের খুঁজে পাওয়া যায়। এতে করে দ্রুত ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হয়ে থাকে। ক্রেতা এবং ডেলিভারি ম্যান উভয়ের এক্ষেত্রে সুবিধা হয়ে থাকে।
রাইড শেয়ারিং ক্ষেত্রে: যারা রাইড শেয়ারিং করে কিংবা এই ধরনের সার্ভিস নিয়ে থাকেন। তাদের উভয়ের শেয়ার করার প্রয়োজন হয়। এতে দ্রুত লোকেশনে পৌঁছানো সম্ভব হয় এবং ভ্রমণ করতে সহজ হয়ে থাকে।
নিজের অবস্থান জানাতে: বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময় এটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে যারা সেলিব্রেটি রয়েছেন তারা এ বিষয়টি শেয়ার করে থাকেন বিভিন্ন পোস্টের সঙ্গে। যাতে করে তার ফ্যানরা অথবা বন্ধু-বান্ধবরা বুঝতে পারেন তিনি এই স্থানে রয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রোগ্রাম কোথায় অনুষ্ঠিত হবে সেজন্য এ সকল লোকেশন শেয়ার করা হয়ে থাকে।
রোড ম্যাপ লোকেশন
রাস্তা ভুলে গেলে রোড ম্যাপ লোকেশন বের করার প্রয়োজন পড়ে। রোড ম্যাপ লোকেশন এর মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে সহজে পৌঁছানো সম্ভব হয়। এছাড়া আপনি শর্টকাট রাস্তাও খুঁজে বের করতে পারবেন রোড ম্যাপ লোকেশন ব্যবহার করে। মূলত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছাতে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আপনি এটি google ম্যাপ এর মাধ্যমেই বের করতে পারবেন। প্রথমে মোবাইলের gps অন করে নিন। গুগল ম্যাপ অ্যাপ্লিকেশনে প্রবেশ করার পর আপনি ডানপাশে ডেস্টিনেশন এর কিছুটা চতুর্ভুজ আকৃতির চিহ্ন দেখতে পাবেন। এখানে ক্লিক করে "Choose start location" অপশন এ আপনি যেখান থেকে আপনার পথচলা শুরু করতে চান সেই স্থানের নাম লিখুন।
আর যেখানে গিয়ে পৌঁছাতে চান সেই জায়গার নাম "Choose destination" অপশনে লিখে দিন। তারপর আপনি একটি ম্যাপ দেখতে পাবেন যেখানে সুন্দরভাবে আপনার গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য দিক নির্দেশনা দিবে। এটিই হলো আপনার রোড ম্যাপ লোকেশন।
আমি এখন কোন গ্রামে আছি - আমি এখন কোন থানায় আছি
আমি এখন কোথায় আছি বা আমি এখন কোন থানায় আছি অথবা আমি এখন কোন গ্রামে আছি তা অনেক সময় জানার প্রয়োজন পড়ে। আপনি গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে আপনি কোন গ্রামে আছেন অথবা আপনি কোন থানায় আছেন তা সহজেই বের করতে পারবেন।
এটি বের করার জন্য প্রথমে আপনাকে মোবাইল ফোনে লোকেশন অপশন অন করে গুগল ম্যাপে প্রবেশ করতে হবে। অ্যাপে ঢুকার পর ডান পাশে গোল চিহ্ন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করুন। তারপর ম্যাপে একটি নীল চিহ্ন ফুটে উঠবে। এটিই হলো আপনার বর্তমান লোকেশন।
এভাবে অতি সহজে আপনি এখন কোন গ্রামে আছেন অথবা আপনি এখন কোন থানায় আছেন তা সহজেই বের করে ফেলতে পারবেন।
আমার জায়গার নাম কি - গুগল ম্যাপের মাধ্যমে নিজের লোকেশন কিভাবে বের করতে হয়
অনেক সময় আপনারা google-এ সার্চ দিয়ে থাকেন আমার জায়গার নাম কি লিখে। আপনি কোথাও যদি হারিয়ে গিয়ে থাকেন কিংবা এমন কোনো অপরিচিত জায়গায় গেলেন কিন্তু আপনি সেই জায়গার নাম জানেন না। সে ক্ষেত্রে আপনার কাছে যদি একটি স্মার্ট ফোন থাকে তাহলে সহজেই আপনার জায়গার নাম কি তা জেনে নিতে পারবেন।
কেননা এটি জানা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো বিপদ মোকাবেলায় আমাদের কাছে সাহায্য চাইতে পারবেন। আপনি আশেপাশের লোকজনের সাহায্য নিয়ে যদি জানতে না পারেন তাহলে গুগল ম্যাপ অ্যাপস ব্যবহার করে আপনার জায়গার নাম বের করতে পারবেন।
গুগল ম্যাপে ঢোকার পর আপনার মোবাইলের স্ক্রিনের ডান পাশে যে নীল চিহ্নটি থাকবে, সেটিতে ক্লিক করলে আপনি আপনার জায়গার নাম দেখতে পাবেন। ম্যাপে আপনার অবস্থান যে জায়গায় মোবাইল ফোনে সেখানে একটু জুম করলে আপনি আপনার জায়গার নাম ভালোভাবে দেখতে পারবেন।
শেষ কথা: গুগল ম্যাপের মাধ্যমে নিজের লোকেশন কিভাবে বের করতে হয়
আমি এখন কোথায় আছি তা শেয়ার করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রয়োজনের চাহিদার কারণেই এটি শেয়ার করা হয়। তবে একটি বিষয় অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। যাতে করে নিজের প্রাইভেসি নষ্ট না হয় এমন ভাবে শেয়ার করতে হবে। কারণ,
পাবলিক প্লেসে এগুলো শেয়ার করলে নানা ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। একই সঙ্গে আমাদের সবার উচিত এগুলোকে ইলিগ্যাল হিসেবে ব্যবহার না করে ভালো কাজে ব্যবহার করা। এতে করে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য এবং অন্যান্য তথ্যগুলো সুরক্ষিত থাকবে। কেননা অধিকাংশ ক্রাইমগুলো হয়ে থাকে এই লোকেশন শেয়ারের কারণে।
আশা করা যাচ্ছে আপনারা এখান থেকে আমি এখন কোথায় আছি এ বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা পেলেন। একই সঙ্গে লোকেশন শেয়ার করার নিয়ম সম্পর্কেও জানলেন আপনারা।
অনলাইন ইনকাম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url