চালতার উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় ভাতের মাড়ের উপকারিতাচালতার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। এমনকি গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা-ও রয়েছে। এ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না বা জানতে চান। তাই আজকে আমরা চালতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব যা আশা করি আপনার অনেক উপকারে আসবে।
চালতার উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা
এছাড়া গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা সহ আমরা আরও আলোচনা করব চালতার আচার কিভাবে বানায়, চালতা খাওয়ার নিয়ম, চালতা পাতার উপকারিতা এবং চালতা ফুলের ছবি যারা দেখেননি তারা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে দেখতে পারবেন। এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়লে চালতার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আপনি জানতে পারবেন।

ভূমিকা

আমাদের অতি পরিচিত জনপ্রিয় একটি ফল হচ্ছে চালতা। অনেকেই জানতে চান চালতা ফলের ইংরেজি। চালতা ফলের ইংরেজি হলো Alephant Apple। এই ফল আমাদের এশিয়া মহাদেশে বেশি জন্মাতে দেখা যায়। এই ফল খেতে কিছুটা টক জাতীয় মনে হতে পারে। তাই চালতা ফল আচার বানিয়ে অনেকেই খেয়ে থাকেন।

চালতার উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমনই চালতার অপকারিতা বা কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। তবে তা সামান্য। সঠিক নিয়মে চালতা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এমনকি গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা আছে, যদি আপনি সঠিক নিয়মে খান। তো চলুন আর বেশি দেরি না করে মূল আলোচনা গুলো শুরু করা যাক।

চালতার উপকারিতা ও অপকারিতা

চালতা বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলাতেই দেখা যায়। চালতার আচার খায়নি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এটি খেতে বেশ সুস্বাদু। চালতা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। চালতায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

চালতা একটি আঁশযুক্ত ফল। এখানে আয়রন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফসফরাস এবং প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি পাওয়া যায়। এগুলো আপনার শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপকারী উপাদান। কিন্তু চালতার কিছু অপকারিতা রয়েছে।
যখন আপনি চালতা অতিরিক্ত পরিমাণ খেয়ে ফেলবেন তখন এটি আপনার শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত চালতা খেলে পেট খারাপ হতে পারে। নিচে চালতার উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

চালতার উপকারিতা

শুধু গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে এমন কিন্তু নয়। এই ফল সকলের জন‍্যই উপকারী। চালতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কেননা এই ফল খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। চালতার ভিটামিন সি লিভার পরিষ্কার করতে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।

যাদের খারাপ কোলেস্টেরল রয়েছে তাদের জন্য চালতা খুবই উপকারী। এটি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। পূর্বে বলেছিলাম চালতা ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেও সহায়তা করে।

আঁশ জাতীয় ফল হওয়ার কারণে এটি আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। ঠাণ্ডা জাতীয় অসুখ যেমন সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি কমাতে চালতা খুবই উপকারী। এজন্য চালতা ফলের রস পান করতে পারেন।

শুধু ঠাণ্ডা জনিত অসুখ-ই নয়, বরং এটি কিডনি এবং লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করে। হালকা গরম পানির সাথে নিয়মিত চালতার রস পান করলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়। এই ফল গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী। চলুন এখন গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে নেই।

গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা

যারা গর্ভধারণ করে তাদের অনেক সময় কোনো কিছু খেতে ভালো লাগে না, অর্থাৎ মুখের রুচি নষ্ট হয়ে যায়। সময় তারা একটা জাতীয় ফল খেতে স্বচ্ছন্দ বোধ করে বা তাদের ইচ্ছা করে। এজন্য গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের চালতার আচার দেখলে লোভ সামলাতে পারে না। গর্ভাবস্থায় চালতা খেলে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং মুখের রুচি ফিরে আসে।

এই ফলে পাওয়া যায় ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। যার কারণে গর্ভধারণকালে এটি খেলে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে এবং শিশুর চোখের দৃষ্টিও উন্নত হয়। আমরা সকলেই জানি ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টি উন্নত করে, আর চালতা ফলে ভিটামিন এ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। যা সকলের চোখের জন্যেই উপকারী। গর্ভবতী মায়ের কমন একটি সমস্যা হলো হজমের সমস্যা।

এ সময় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। চালতা ফলে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার পাওয়া যায়। যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। এক্ষেত্রে আপনি চালতা ফলের নরম আঁশ গুলো চিবিয়ে খেতে পারেন। গর্ভধারণকালে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই প্রয়োজন। আর চালতা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

বিশেষ করে যারা উচ্চ রক্তচাপের রোগী রয়েছেন তাদের জন্য চালতা উপকারী। গর্ভাবস্থায় অনেক সময় পেট বড় হওয়ার কারণে ত্বক ফেটে যায়। আর এই ত্বক ফাটা দূর করতে বিভিন্ন ক্রিম ব্যবহার করা হয়। এসব কৃত্রিম জিনিসপত্র ছেড়ে চালতা ফলের রস পান করুন। কেননা চালতা ফলের ভিটামিন সি, কোলাজেন এবং পটাশিয়াম ত্বক ফেটে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।
ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। চালতা ফলে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে যা গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত জরুরী। এটি শিশুর হাড় দাঁত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই কারণে শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে নিয়মিত চালতা ফল খেতে পারেন। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের অনেক সময় রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।

এজন্য তাদের আয়রনের প্রয়োজন হয়। চালতা ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন যা গর্ভাবস্থায় খুবই উপকারী, এটি রক্তস্বল্পতা দূর করে। চালতা ফল গর্ভবতী মহিলা এবং তার শিশুর জন্য অনেক উপকারী। চালতার পুষ্টিগুণ তাদের হার্টকে ভালো রাখতে সহায়তা করতে পারে। গর্ভাবস্থায় অনেকের স্কার্ভি রোগ দেখা দেয়। চালতা ফল খেলে এটি অনেকটা প্রতিরোধ করতে পারে।

গর্ভধারণকালে বেশিরভাগ সময় পেটে ব্যথা এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা হতে পারে। প্রতিদিন চালতার রস খেলে এই ব্যথা দূর হয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন গর্ব অবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা কত বেশি। কিন্তু অবশ্যই আপনাকে এটি সঠিক নিয়মে খেতে হবে তা না হলে কিছু ক্ষতিকর লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গর্ভাবস্থায় কখনও চালতার আচার খাবেন না। তাহলে হয়তো ভাবছেন কিভাবে খেলে উপকৃত হবেন। আপনি তাজা ফল ভালোভাবে পরিষ্কার করে কেটে টুকরো টুকরো করে খেতে পারেন অথবা চালতা ফল থেকে রস বের করে পান করলে গর্ভাবস্থায় উপকার পাওয়া যায়। কাঁচা অবস্থায় চালতা ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই খোসাগুলো ছাড়িয়ে নিবেন।

খালি পেটে চালতা খাবেন ঠিক নয়। গর্ভে থাকা শিশুর সমস্যা এড়াতে খালি পেটে চালতা বা চালতার রস পান করা থেকে দূরে থাকুন। আপনি খাবার খাওয়ার ১-২ ঘণ্টা পর চালতা খান। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মসলা খাওয়া যেহেতু খাওয়া নিষিদ্ধ সেহেতু চালতা মসলার সাথে না মিশিয়ে খান। গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা গুলো আমরা জানলাম। কিন্তু এটি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত।

চালতার অপকারিতা

চালতার অপকারিতা বা কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তবে অপকারিতার চেয়ে চালতার উপকারিতা-ই বেশি। চালতা খাওয়ার অনিয়মের কারণে অপকারিতা গুলো দেখা দেয়। নিচে চালতার অপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরা হলো:
  • গর্ভাবস্থায় মসলাযুক্ত চালতার আচার খাওয়া মোটেও উচিত নয়, এতে পেটের সমস্যা হতে পারে। এমনকি গর্ভে থাকা শিশুর সমস্যা হতে পারে।
  • অনেকের চালতা খেলে অ‍্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যাদের অতিরিক্ত পরিমাণ অ‍্যালার্জি রয়েছে।
  • চালতা আঁশযুক্ত খাবার হওয়ার কারণে এটি অতিরিক্ত খেলে আপনার ডায়রিয়া-জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • বেশিরভাগ সময়ই চালতা আচার বানিয়ে খাওয়া হয়। আচার ছাড়া শুধু ফল হিসাবে অনেক কম মানুষই খেয়ে থাকে। চালতার আচারের মশলা খাওয়ার কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে। এমনকি হার্টের সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় চালতার আচার খাওয়া ঠিক নয়।
  • চালতা খেলে গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই পরিমাণে কম খান।
  • আপনি যদি আগে থেকে কোনো রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে চালতা খাওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

চালতা পাতার উপকারিতা

চালতা পাতার উপকারিতা হয়েছে। বিশেষ করে ঠাণ্ডা জনিত অসুখ যেমন সর্দি, জ্বর, কাশি ইত্যাদি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এসব সমস্যা দূর করতে চালতা পাতা থেকে রস বের করুন এবং এর সাথে মধু মিশিয়ে পান করুন, তাহলে দ্রুত ঠাণ্ডা জনিত সমস্যা তাড়াতাড়ি দূর হবে।

অনেকেরই আমাশয় জনিত সমস্যা দেখা দেয়। আমাশয় থেকে মুক্তি পেত চালতা পাতার রস পান করতে পারেন। চালতা পাতার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো, এই পাতার রস খেলে বাচ্চাদের পেটের সমস্যা দূর হয়। চালতা পাতার উপকারিতা পেতে হলে প্রতিদিন অর্ধেক চামচ অথবা এক চামচ করে চালতা পাতার রস পান করুন।
শিশুদের চালতা পাতা রস খাওয়ানোর আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আর অতিরিক্ত পরিমাণ চালতা পাতার রস খাওয়া যাবে না। এ ছিল চালতা পাতার উপকারিতা। চালতা ফলের পাশাপাশি চালতা পাতার রস চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত খেতে পারেন। চালতার উপকারিতা ও অপকারিতা তো জানলেন, চলুন এখন চালতা খাওয়ার নিয়ম জেনে নেই।

চালতা খাওয়ার নিয়ম

চালতার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই রয়েছে। সেই সাথে চালতা খাওয়ার নিয়ম রয়েছে। সঠিক নিয়মে চালতা না খেলে শরীরের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে। আমাদের সকলের কাছে চালতার আচার খুবই মজাদার এবং জনপ্রিয় একটি খাবার।

চালতার আচার আপনি খেতে পারেন তবে গর্ভাবস্থায় না খাওয়াই ভালো। আর বাকি সকলের জন্য কম পরিমাণ মসলা দিয়ে চালতা আচার বানিয়ে খাওয়া যাবে। অনেকে চালতা ফল কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খেয়ে থাকেন। এছাড়া চালতা ফলের রস বের করে খেলে উপকার পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি।

চালতা খাওয়ার নিয়ম মোট তিনটি তা হলো: এটি কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া, রস বের করে খাওয়া এবং আচার বানিয়ে খাওয়া যায়। আগে থেকে আপনার শরীর কোনো রোগে আক্রান্ত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চালতা খাবেন।

চালতা ফুলের ছবি

চালতা ফুল থেকে চালতা ফল হয়। চালতার কাছে যখন চালতা ফুল ফোটে তখন দেখতে দারুণ লাগে। কেননা চালতা ফুল দেখতে অনেক সুন্দর। কিন্তু অনেকেই চালতা ফুল দেখেননি বা দেখতে চান। তাই আপনাদের জন্য নিচে চালতা ফুলের ছবি দেওয়া হলো:
চালতা ফুলের ছবি

চালতার আচার কিভাবে বানায়

অনেকেই জানেন না চালতার আচার কিভাবে বানায়। চালতার আচার সবারই প্রিয় একটি আচার। এই আচার দেখলেই মুখে পানি চলে আসে। অনেকেরই এই আচার খেতে মন চায় কিন্তু বানানোর নিয়ম জানে না। তাই আজকে আমরা চালতার আচার কিভাবে বানায় সে সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।

প্রথমে কয়েকটি পূর্ণ চালতা ফল নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করুন। এরপর চালতা ফল থেকে খোসা গুলো ছাড়িয়ে নিন। এরপর লম্বা ভাবে আপনার মন মতো সাইজে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। এরপর চালতাগুলো গরম পানিতে দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ করার সময় এক চামচ হলুদ গুঁড়ো জলে দিয়ে দিন।

এরপর আপনাকে চালতা ভালোভাবে সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে গেলে চালটা হলো ঠাণ্ডা হতে দিন এবং পানিগুলো ঝরিয়ে নিন। এরপর আপনাকে প্রয়োজনমতো জিরা, ধনিয়া, মৌরি, শুকনা মরিচ, তেজপাতা এবং কালো সরিষা চুলায় হালকা ভেজে নিতে হবে। এরপর ভালোভাবে ভাজা হয়ে গেলে এগুলো ব্লেন্ডার করে গুড়া করুন।

অপরদিকে চালতাগুলো ঠাণ্ডা হয়ে গেলে কোনো শক্ত বস্তু দিয়ে চালতা গুলো সামান্য থেঁতলে নিন যাতে চালতার ভেতরের আঁশগুলো বেরিয়ে আসে। তাহলে খেতে আরও মজাদার হবে। এরপর একটি কড়াইয়ে সামান্য পরিমাণ সরিষার তেল দিয়ে প্রয়োজন মতো এলাচ, তেজপাতা, দারুচিনি, রসুন বাটা এবং হলুদের গুঁড়া দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করতে হবে।

এরপর এতে সামান্য ভিনেগার যোগ করতে পারেন। এরপর আপনার চালতা গুলো সেখানে ঢেলে দিন। এরপর প্রথমে ব্লেন্ডার করা গুড়া গুলো ঢেলে দিয়ে চালতা গুলো নাড়াচাড়া করতে থাকুন। এরপর এতে আপনার প্রয়োজনমতো গুড় অথবা চিনি যোগ করুন। সামান্য পরিমাণ পানি দিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন।

কিছুক্ষণ পর দেখবেন পানিগুলো শুকিয়ে গিয়েছে, তখনই বুঝবেন আপনার চালতার আচার তৈরি হয়ে গিয়েছে। এভাবে চালতার আচার তৈরি করে খেতে বেশ মজা লাগে এবং এটি অনেকদিন ধরে সংরক্ষণ করে রাখা যায়।

FAQ: প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

১. গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার নিয়ম কি?

উত্তর: গর্ভাবস্থায় চালতা আচার বানিয়ে খাওয়া উচিত নয়। এছাড়া বিভিন্ন উপায়ে চালতা খাওয়া যেতে পারে যেমন কাঁচা বা সবজি হিসেবে অথবা শরবত অথবা জুস বানিয়ে।

২. বাচ্চাদের চালতা খাওয়ানো যাবে কি?

উত্তর: বাচ্চাদের চালতা খাওয়ানো যাবে। তবে চালতার আচার না খাওয়ানোই ভালো। এছাড়া চালতা বা চালতার রস বাচ্চাকে কম পরিমাণে খাওয়াতে হবে। আর পাঁচ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের চালতা খাওয়ানোর আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

৩. খালি পেটে চালতা খেলে কি হয়?

উত্তর: খালি পেটে চালতা খেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে পেট ব্যথা এবং গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা হতে পারে। এজন্য খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পর চালতা খাওয়া উচিত।

আমাদের শেষকথা

চালতা ফলে ঔষধি গুণ রয়েছে। এই ঔষধি গুণ সম্পন্ন ফল বর্ষাকাল থেকে শীতকাল পর্যন্ত গাছে পাওয়া যায়। আমাদের মধ্যে অনেকই রয়েছেন যারা চালতার উপকারিতা গুলো না জানার কারণে এটি খায় না। আবার অনেকেই চালতার অপকারিতা সম্পর্কে অবগত নন।

তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের চালতার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা বিষয়ক আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন। চালতা খাবারের নিয়ম রয়েছে, যা আমরা উপরে আলোচনা করেছি। অবশ্যই সঠিক নিয়মে চালতা খাবেন।

চালতা খাওয়ার পর যদি আপনার শারীরিক কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। আর গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার পূর্বে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে অতিরিক্ত খেয়ে না ফেলেন এবং চালতা যেন মসলাযুক্ত না হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অনলাইন ইনকাম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url