চার্লস ব্যাবেজ কত সালে কম্পিউটার আবিষ্কার করেন

কম্পিউটারের উপকারিতা ও অপকারিতাকম্পিউটারের মূল ইতিহাস নিয়ে অনেকের মধ্যেই দ্বিমত রয়েছে। অনেকেই চার্লস ব্যাবেজ কত সালে কম্পিউটার আবিষ্কার করেন সে বিষয়ে জানেন না। কম্পিউটার আবিষ্কার করা হয়েছে যুগের পর যুগ ধরে গবেষণা করে। বর্তমান যুগে কম্পিউটার অনেক উন্নত একটি ডিভাইসে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে কম্পিউটার ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না।
চার্লস ব্যাবেজ কত সালে কম্পিউটার আবিষ্কার করেন
কিন্তু এই আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে অথবা তিনি কোন দেশের নাগরিক সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি কম্পিউটার আবিষ্কার করেন কে এবং কত সালে সহ কম্পিউটার আবিষ্কারের ব্যাপারে সকল কিছু জানতে পারবেন। তো চলুন এখন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

সূচিপত্র: কম্পিউটার আবিষ্কার করেন কে এবং কত সালে | চার্লস ব্যাবেজ কত সালে কম্পিউটার আবিষ্কার করেন

.
যেকোনো চাকরির পরীক্ষাতে কম্পিউটার সম্পর্কে প্রশ্ন করা হতে পারে। এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন যা বিভিন্ন পরীক্ষায় অথবা প্রতিযোগিতায় আসে।

কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস

প্রাচীনকালে চীন দেশে হিসাব গণনা করার জন্য অ‍্যাবাকাস (Abacus) নামের একটি যন্ত্র ব্যবহার করা হতো। আর এই যন্ত্রের মাধ্যমেই কম্পিউটার আবিষ্কারের চিন্তা মাথায় এসেছে বলে মনে করা হয়। তবে এটা নিশ্চিত যে, অ‍্যাবাকাস থেকেই আধুনিক ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করা হয়েছে।

শুধু চীনারা নয় বরং ব্যাবেলিয়নরাও এই অ‍্যাবাকাস যন্ত্রটি ব্যবহার করত। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায় ঈসা আলাইহিস সালাম এর জন্মের ২৪০০ বছর পূর্বে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করা হতো। ১৬৪২ সালে পাসক‍্যালাইন নামের একটি যন্ত্র আবিষ্কার করা হয়, এই যন্ত্রটির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ বিয়োগ করা যেত।

এরপর ১৬৭৩ সালে লেইবনিজ ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করা হয় যেটা দিয়ে গুণ ও ভাগ করা যেত। এরপরেই চার্লস ব্যাবেজ ১৮২২ সালে ডিফারেন্স ইঞ্জিন এবং তারপর ১৮৩৭ সালে অ্যানালিটিকাল ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন। আর এরপরেই ইলেকট্রনিক ডিজিটাল কম্পিউটার আবিষ্কার হয়। শত শত বছরের সাধনার ফলে কম্পিউটারের বিকাশ ঘটেছে।

কম্পিউটার মানবজীবনকে সম্পন্ন ভাবে পরিবর্তন করে দিয়েছে। বর্তমানের যেসব উন্নত মানের কম্পিউটার তৈরি করা হচ্ছে সেসব কম্পিউটার গেম খেলা, বিনোদন থেকে শুরু করে মহাকাশ গবেষণা পর্যন্ত ব্যবহার করা হচ্ছে।
ভবিষ্যতে কম্পিউটারে আরও নতুন নতুন ফিচার যোগ করা হবে যাতে এটি আরও শক্তিশালী এবং এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। চলুন এখন বিস্তারিত জেনে নেই চার্লস ব্যাবেজ কত সালে কম্পিউটার আবিষ্কার করেন।

চার্লস ব্যাবেজ কত সালে কম্পিউটার আবিষ্কার করেন

এখন আমরা চার্লস ব্যাবেজ কত সালে কম্পিউটার আবিষ্কার করেন সে সম্পর্কে আপনাকে জানাবো। চার্লস ব্যাবেজ ছিলেন যুক্তরাজ্যের নাগরিক, তিনি লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৮২ সালে চার্লস ব্যাবেজ সর্বপ্রথম কম্পিউটার সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন।

তিনি ১৮৩৭ সালে ডিফারেন্স ইঞ্জিন ও অ‍্যানালিটিক‍্যাল ইঞ্জিন নামের যন্ত্র সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন যা আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি মূলত পরিপূর্ণভাবে কম্পিউটার আবিষ্কার করতে সক্ষম হননি।

তিনি মারা যাওয়ার পর তার নকশাগুলো এবং তার ধারণাকে কাজে লাগিয়ে ১৯৪৩ সালে বিজ্ঞানী জর্জ হাওয়ার্ড আইকেন কম্পিউটার আবিষ্কার করেছিলেন। চার্লস ব্যাবেজ এর যন্ত্র এবং ধারণাগুলো কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই তাকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়।

কম্পিউটার আবিষ্কার করেন কে এবং কত সালে

"কম্পিউটার আবিষ্কার করেন কে এবং কত সালে" এই প্রশ্নটি প্রায়শই অনেক চাকরির পরীক্ষাতে করা হয়। তাই এটি সকলের জন্য জানার জরুরী। মূলত কম্পিউটার একক কোনো ব্যক্তির আবিষ্কার নয়। যুগের পর যুগ ধরে বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টায় কম্পিউটার আবিষ্কার করা হয়েছে।

সর্বপ্রথম আধুনিক কম্পিউটারের ধারণা দেন চার্লস ব্যাবেজ। এজন্য তাকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়। তিনি 1822 সালে ডিফারেন্স ইঞ্জিন নামক একটি গণনা যন্ত্রের ধারণা দেন এবং 1837 সালে অ‍্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামের প্রোগ্রাম যোগ্য কম্পিউটারের নকশা তৈরি করেন।
কিন্তু তিনি এগুলো যন্ত্র আবিষ্কার করার সুযোগ পাননি। চার্লস ব্যাবেজ মারা গেলে তার এসব ধারণা থেকে ১৯৪৬ সালে হাওয়ার্ড আইকেন প্রথম বৈদ্যুতিক ডিজিটাল কম্পিউটার আবিষ্কার করেন। আপনারা আশা করি কম্পিউটার আবিষ্কার করেন কে এবং কত সালে? অথবা চার্লস ব্যাবেজ কত সালে কম্পিউটার আবিষ্কার করেন? এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।

কম্পিউটার কত প্রকার

কম্পিউটার শুধুমাত্র এক ধরনের নয়। বরং কাজের সুবিধার্থে বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার আবিষ্কার করা হয়েছে। গঠন এবং কাজের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তাহলো:
  • ১. অ‍্যানালগ কম্পিউটার
  • ২. ডিজিটাল কম্পিউটার
  • ৩. হাইব্রিড কম্পিউটার
কম্পিউটার আবিষ্কার হওয়ার পরপরই অ‍্যানালগ কম্পিউটার তৈরি করা হয়েছিল। এরপর ডিজিটাল কম্পিউটার তৈরি করা হয়। এটি তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের জন্য গাণিতিক সংকেতের মাধ্যমে তথ্য গ্রহণ করে থাকে এবং নির্ভুলভাবে ফলাফল প্রকাশ করে।

এরপর আবিষ্কার করা হয় আরেকটি উন্নত মানের কম্পিউটার, তাহলো হাইব্রিড কম্পিউটার। এই হাইব্রিড কম্পিউটার অ‍্যানালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে।

কম্পিউটার এর কাজ কি | কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয়

নতুনরা প্রশ্ন করে থাকেন কম্পিউটার এর কাজ কি এবং কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয় সে সম্পর্কে। তাই এখন আমরা কম্পিউটারের প্রধান কাজগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। কম্পিউটারে বিভিন্ন ইনপুট ডিভাইস ব্যবহার করা যায়, যার মাধ্যমে কম্পিউটার তথ্য গ্রহণ করে।

যেমন কিবোর্ড এর সাহায্যে লেখায় ইনপুট করা যায়, মাউস এর সাহায্যে কম্পিউটারকে দিকনির্দেশনা দেওয়া যায়, মাইক্রোফোনের মাধ্যমে শব্দ ইনপুট করা যায়, এছাড়া ছবি অথবা ভিডিও ইনপুট করা যায়। কম্পিউটারের কাজ হলো গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা, বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের কাজ করা।

এছাড়া কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা যায়। শুধুমাত্র লিখিত তথ্য নয় বরং ভিডিও, ছবি ইত্যাদিও সংরক্ষণ করা যায়। অনলাইনে যে কোনো তথ্য আদান-প্রদান করা যায়। এমনকি গেম খেলা, সিনেমা দেখা সহ বিভিন্ন গবেষণার ক্ষেত্রে, আবহাওয়া, অর্থনীতি, চিকিৎসা ক্ষেত্রেও কম্পিউটার ব্যবহার হয়। কম্পিউটারের ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রেই রয়েছে।
শিক্ষাক্ষেত্র থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রশাসনিক কাজে, ব্যাংকের কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে নজরদারি করা যায়।

কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কি কি

কম্পিউটারকে প্রথমত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। তাহলো:
  • ১. হার্ডওয়্যার
  • ২. সফটওয়্যার
হার্ডওয়্যারকে প্রধানত ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
  • ১. ইনপুট ডিভাইস
  • ২. প্রসেসিং ইউনিট
  • ৩. আউটপুট ডিভাইস
  • ৪. স্টোরেজ ডিভাইস
আবার সফটওয়্যারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
  • ১. সিস্টেম সফটওয়্যার
  • ২. এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার

FAQ: প্রায়শই জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

১. কিভাবে কম্পিউটারে লেখালেখিতে দক্ষ হতে পারি?

উত্তর: সাধারণত মোবাইলের চেয়ে কম্পিউটারে টাইপিং করা বেশ কঠিন হয়ে থাকে। এছাড়া কম্পিউটারে টাইপিং করার কিছু কৌশল রয়েছে। এ সকল কৌশল অবলম্বন করে নিয়মিত টাইপিং প্র্যাকটিস করলে আপনি কম্পিউটারে লেখালেখিতে দক্ষ হতে পারবেন। typing.com ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এখানে টাইপিং করার কৌশল সহ বিভিন্ন গেমস খেলার মাধ্যমে টাইপিং শেখানো হয়।

২. কম্পিউটার স্লো কাজ করলে করনীয় কি?

উত্তর: অনেক সময় আমাদের কম্পিউটার স্লো বা ধীরে ধীরে কাজ করে। আপনি যদি কম র‍্যাম ব্যবহার করেন, অপ্রয়োজনীয় বেশি বেশি সফটওয়্যার ইন্সটল করে রাখেন, প্রসেসর যদি পুরনো হয়ে যায়, ভাইরাস আক্রমণ করলে কম্পিউটার ধীরে ধীরে কাজ করে।

তাই সঠিকভাবে কম্পিউটারে কাজ করতে চাইলে এগুলো সমস্যা সমাধান করতে হবে। ভাইরাস স্ক্যান করুন, অতিরিক্ত সফটওয়্যার ডিলিট করে দিন এবং কম্পিউটার এর ডিস্ক ক্লিন করুন। এগুলোর পাশাপাশি কম্পিউটার রিস্টার্ট করতে পারেন।

৩. কম্পিউটার ভাইরাস কি?

উত্তর: কম্পিউটার ভাইরাস হচ্ছে এমন একটি ক্ষতিকারক সফটওয়্যার যা কম্পিউটারে থাকা ফাইলগুলো নষ্ট করে ফেলতে পারে। এছাড়া কম্পিউটারে ভাইরাস থাকলে কম্পিউটার স্লো হয়ে যেতে পারে। এই ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা যায়।

উপসংহার

পৃথিবীতে যত প্রযুক্তি রয়েছে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তি হচ্ছে কম্পিউটার। কম্পিউটারকে দিন দিন উন্নত, শক্তিশালী করা হচ্ছে এবং আমাদের কাজগুলো আরও সহজ হয়ে যাচ্ছে। তবে কম্পিউটার ব্যবহার করে অনেকে সাইবার হামলা করে থাকে। অর্থাৎ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে। এজন্য আপনার কম্পিউটার অবশ্যই নিরাপত্তায় রাখতে হবে।

আমাদের সকলের উচিত কম্পিউটারকে সৎ কাজে ব্যবহার করা, তাহলে একটি উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলা সম্ভব।

সম্মানিত পাঠক আজকে আপনি জানতে পারলেন কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস, চার্লস ব্যাবেজ কত সালে কম্পিউটার আবিষ্কার করেন, কম্পিউটার আবিষ্কার করেন কে এবং কত সালে, কম্পিউটার এর কাজ কি, কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয় ইত্যাদি সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অনলাইন ইনকাম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url