বকের মাংসের উপকারিতা - বক নিয়ে লেখা

dxn ganozhi soap এর উপকারিতাপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনি কি জানেন বকের মাংসের উপকারিতা, বকের মাংসের অপকারিতা, বক পাখির বাসস্থান, বক কি খায়, বক পাখির ছবি, বক পাখির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে? না জানলে বক নিয়ে লেখা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে বিস্তারিত জেনে নিন।

বক নিয়ে লেখা এই আর্টিকেলে আপনি আরও জানতে পারবেন, বকের মাংস কি হালাল ইত্যাদিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন বক পাখি সম্পর্কে। তাই মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

বক নিয়ে লেখা

বক পাখিকে ইংরেজিতে বলা হয় Heron। বক পাখি আকাশে উড়তে দেখেনি এমন হয়তো কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা বাংলাদেশে। এছাড়া গ্রামে নদী, নালা, খাল, বিলের আশেপাশের বক পাখি প্রায় প্রতিদিন দেখা যায়। সাদা বক দেখতে খুবই সুন্দর। জানলে অবাক হবেন পৃথিবীতে একটি দুইটি নয় বরং ৬৪ প্রজাতির বক দেখা যায়।

বর্তমানে বক অধিক পরিমাণে শিকার করা হচ্ছে যার কারণে বকের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। কেননা বকের মাংসের উপকারিতা রয়েছে। তবে বাংলাদেশের আইনে বক পাখি শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ, কেননা এটি একটি বন্যপ্রাণী। বক পাখি প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।

শুধুমাত্র জমিন নয় বরং আকাশে যখন বক পাখি উড়ে বেড়ায় তখন আকাশেরও সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়। এরা সাধারণত কবুতরের চেয়ে বড় হয়ে থাকে এবং এদের পা, গলা, ঠোঁট অনেক লম্বা হয়। এদের ডাক কর্কশ প্রকৃতির। বাংলাদেশের মানুষের উচিত বাংলাদেশের আইন মেনে চলা এবং বক শিকার না করা।

আরও পড়ুন টাইমেক্স খেলে কি হয় জেনে নিন

কেননা দিন দিন বক পাখির পরিমাণ অনেক কমে যাচ্ছে, এরকম চলতে থাকলে বাংলাদেশে বকের সংখ্যা শূন্য হয়ে যেতে পারে। যদিও শীতকালে বাহিরের দেশ গুলো থেকে অতিথি বক পাখি আসে, তবে তা যথেষ্ট নয়।

বকের মাংসের উপকারিতা

বকের মাংসের উপকারিতা আমাদের অনেকেরই অজানা। বর্তমানে বকের ব‍্যাপারে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে না খাওয়া হলেও প্রাচীনকালে এটি পুষ্টিকর এবং ঔষধি গুণসম্পন্ন খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হতো। নিচে বকের মাংসের উপকারিতা বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:

১. প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে: বক পাখির মাংসে অনেক প্রোটিন পাওয়া যায়। যা শরীরের মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে, কোষ এবং টিস্যু মেরামত করে, এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

২. বকের মাংসে ক্ষতিকর চর্বি নেই: অন্যান্য পাখির মাংসের তুলনায় বকের মাংসে তুলনামূলকভাবে কম চর্বি থাকে। যার ফলে এই মাংস খাওয়া হার্টের জন্য নিরাপদ। এটি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সাহায্য করবে। বকের মাংসে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে না।

৩. প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং খনিজ থাকে: বুকের মাংসে রয়েছে আয়রন, জিংক, ভিটামিন B12, ভিটামিন B3 এর মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যা আমাদের শরীরের রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এমনকি ত্বক এবং স্নায়ুর জন্য বেশ উপকারী।

৪. ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে: প্রাচীনকালের মানুষ বিশ্বাস করত বকের মাংস খেলে শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি হয় জয়েন্টের ব্যথা দূর হয় এবং দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। যদিও এটি বৈজ্ঞানিকভাবে গবেষণা করা দরকার। তবে বকের মাংসে যে সকল পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেই হিসেবে বিবেচনা করলে তাদের ধারণা সঠিক।

৫. প্রাকৃতিক খাদ্য: বকের মাংস প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা যায়। কেননা বক কোনো খামারে লালন পালন করা হয় না এবং কোনো ক্ষতিকর খাবার প্রদান করা হয় না। তাই অন্যান্য মাংসের তুলনায় বকের মাংস বেশি পুষ্টি করা হয়ে থাকে। তবে খাওয়ার আগে ভালোভাবে পরিষ্কার করে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় রান্না করা জরুরী।

বকের মাংসের অপকারিতা

বকের মাংসের উপকারিতা তো রয়েছে বটেই, কিন্তু পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। প্রথমত এটি শিকার করা এবং এই পাখির মাংস বেচাকেনা করা আইনগত ভাবে নিষিদ্ধ। যদি করেন তাহলে আপনার জেল জরিমানা হতে পারে।

বক সাধারণত বিভিন্ন জলাভূমি থেকে নোংরা এবং বিষাক্ত প্রাণী বা খাবার খেয়ে থাকে। তাই এটি যদি ভালোভাবে রান্না করা না হয় তাহলে মানুষের শরীরে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। এরা বন‍্যপ্রাণী হওয়ায় এদের মাংস কিছুটা শক্ত হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কি

কোনো কোনো সংস্কৃতিতে বক খাওয়া নিষিদ্ধ, কেননা এটিকে তারা আধ্যাত্মিকতার প্রতীক হিসেবে দেখে। তাই সেখানে বকের মাংস খাওয়া নিন্দনীয় কাজ। যেখানে বকের মাংস খাওয়া বৈধ সেখানে গিয়ে বকের মাংস খেয়ে যদি কোনো অস্বস্তি বোধ করেন তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

বক পাখির বাসস্থান

অনেকেই বক পাখি কোথায় থাকে বা তার বাসস্থান সম্পর্কে জানেন না। বক সাধারণত জলাশয় এর ধারে বসবাস করে। বিশেষ করে এরা বিল, হাওর, ঝিল ছোট পুকুর ইত্যাদির পাশে যেখানে লুকিয়ে থাকা যায় সেখানে বাসস্থান বানায়।

এরা সাধারণত ঝোপঝাড়ের ভেতর এবং গাছের ডালে বাসা বাঁধে। এরা বিশেষ করে বর্ষাকালে যখন তাদের ডিম পাড়ার সময় হয়, তখন তারা বাসা তৈরি করে। এদেরকে ফসলের জমিতে থাকতেও দেখা যায়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন বক নিয়ে লেখা এই আর্টিকেলে বক পাখির বাসস্থান সম্পর্কে।

বক কি খায়

বক সাধারণত বিভিন্ন জলাশয় মাছ এবং পোকামাকড় শিকার করে খায়। বিশেষ করে এদের প্রধান খাদ্য হলো মাছ। এরা নদী-নালা খাল, বিলে ছোট ছোট বা মাঝারি আকারের মাছ শিকার করে খায়।

এছাড়া অনেক সময় এরা ছোট সাপ, ব্যাঙ এবং বিভিন্ন কীটপতঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকে বিশেষ করে যখন তারা মাছ পায় না। এরা ছোট পোকা, ফড়িং, শামুক, কাদার মধ্যে বসবাস করা পোকামাকড় ইত্যাদি খেতেও পছন্দ করে।

বক অনেক চালাক প্রাণী, এরা শিকারে বেশ দক্ষ। অনেক সময় বক এক পায়ে খাড়া হয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে এবং মাছ বা পোকামাকড় দেখলেই দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়ে শিকার করে।

বকের মাংস কি হালাল

বকের মাংস খাওয়া হালাল নাকি হারাম তা অনেকেই জিজ্ঞেস করে থাকেন। বকের মাংস কি হালাল, কেননা ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে যে সকল পাখি নিজের পাঞ্জা দ্বারা শিকার করে জীবন যাপন করে সে সকল পাখি খাওয়া হারাম এবং যে সকল পাখি পাঞ্জা দ্বারা শিকার করে না সেগুলো হালাল।

তবে হালাল হওয়ার আরও কিছু শর্ত রয়েছে যেমন অবশ্যই আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই করতে হবে। বক পাখি নিজের ঠোঁট দিয়ে শিকার করে থাকে সে হিসেবে এটি হালাল বলেন অনেকেই। তবে এরা যেহেতু মাংসাশী পাখি তাই বেশিরভাগ আলেম এই পাখির মাংস খাওয়া হারাম বলেছেন।

আরও পড়ুন 1 থেকে 1000 টাকার মোবাইল ঘড়ি

এদেরকে অপবিত্র প্রাণী মনে করা হয়, বক অপবিত্র জায়গায় বসবাস না করলেও এরা সাপ, ব্যাঙ সহ বিভিন্ন বিষাক্ত পোকামাকড় খেলে ফেলে, তাই এই পাখি না খাওয়াই ভালো। এছাড়া আইনি নিষেধাজ্ঞা মান্য করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই বকের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য বৈধ প্রাণীর মাংস খেতে পারেন।

বক পাখির ছবি

আপনারা অনেকেই বক পাখির ছবি দেখতে চান। তাই নিচে বক পাখির ছবি দেওয়া হলো। বক নিয়ে লেখা এই আর্টিকেলে বক পাখির এই ছবি দেখে এর বৈশিষ্ট্য বা আকার আকৃতি সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা পাবেন।

বক পাখির বৈশিষ্ট্য

বক এক ধরনের জলজ পাখি। এদেরকে জলাশয়ের আশেপাশে দেখতে পাওয়া যায়। বক পাখির বৈশিষ্ট্য হলো এদের গলা অনেক লম্বা তাই সহজেই শিকার করতে পারে। এরা ঠোঁট দিয়ে শিকার করে, এদের ঠোঁটও বেশ লম্বা।

এদের লম্বা পা রয়েছে এবং এরা বিভিন্ন রঙের হতে পারে যেমন সাদা, বাদামি এবং ধূসর। এরা অনেক সময় একা আবার অনেক সময় দল বেঁধে বসবাস করে এবং শিকার করে। এরা ঝপ ঝাড় বা গাছের ডালে বাসা বেঁধে ডিম পাড়ে। একবারে তিন থেকে পাঁচটি পর্যন্ত ডিম পাড়তে পারে।

FAQ: বকের মাংসের উপকারিতা - বক নিয়ে লেখা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর

১. বকের মাংস খাওয়া কি হালাল?

উত্তর: এ ব্যাপারে আলেমদের মতে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে বেশি সংখ্যক আলেম বলেছেন বকের মাংস খাওয়া হারাম। কেননা এর বিষাক্ত প্রাণীর শিকার করে খায়। হানাফি মাজহাবের মতে বকের মাংস খাওয়া মাকরুহে তাহরীমী।

২. বকের মাংস কোথায় পাওয়া যায়?

উত্তর: বাংলাদেশের বিভিন্ন হাটবাজারে বক পাখি বিক্রি করতে দেখা যায়, যদিও এটি আইনগত নিষিদ্ধ। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বকের মাংস বেশি পাওয়া যায়। কেননা গ্রামে বকের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি হওয়ার কারণে অনেকে এটি শিকার করে থাকে। তবে এটি একটি অপরাধ মূলক কাজ।

৩. বকের মাংসের উপকারিতা গুলো কি কি?

উত্তর: বকের মাংসের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এতে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে। এছাড়া এতে বিভিন্ন খনিজ এবং ভিটামিন পাওয়া যায় যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আর এতে কোনো ক্ষতিকর চর্বি থাকে না।

বক নিয়ে লেখা পোস্ট সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য

সকল দিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে বকের মাংসের উপকারিতা থাকলেও এটি শিকার করা এবং খাওয়া উচিত নয়। তবে শুধুমাত্র মাছ এবং ছোট ছোট পোকামাকড় খেয়ে যে সকল বক পাখি বেড়ে উঠে সেগুলো খাওয়া যেতে পারে, তবে সেখানেই শুধু খাওয়া যাবে যেখানে এটি বৈধ।

তবে বাংলাদেশের আইনে যেহেতু অবৈধ তাই বকের মাংস খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন। প্রিয় পাঠক, আপনি আশাকরি বকের মাংসের উপকারিতা, বকের মাংসের অপকারিতা, বক পাখির বাসস্থান, বক কি খায়, বক পাখির ছবি, বক পাখির বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বক নিয়ে লেখা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন।

আর্টিকেলটির দ্বারা উপকৃত হলে আপনার বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। এছাড়া আরও কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

Online Income IT

আসসালামু আলাইকুম। আমি মোছাঃ শাহিনা। আমি একজন ডিজিটাল মার্কেটার এবং প্রফেশনাল বাংলা আর্টিকেল রাইটার। আমি অর্ডিনারি আইটি থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করেছি। আমি দীর্ঘদিন ধরে আপনাদের সেবায় আর্টিকেল লিখে যাচ্ছি। আমাদের আর্টিকেল সম্পর্কে আপনাদের কোনো মন্তব্য থাকলে এবং যেকোনো প্রয়োজনে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমাদের পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।