অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম - বিদেশ থেকে ফোনে বিবাহ করার নিয়ম

শূকরের মাংস হারাম কেন জানতে চাপুনপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আপনারা অনেকেই অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম এবং বিদেশ থেকে ফোনে বিবাহ করার নিয়ম সম্পর্কে প্রশ্ন করে থাকেন। তাই আজকে আমি অনলাইনের মাধ্যমে মোবাইলে বিয়ে করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। যারা বিদেশ থেকে বিবাহ করতে চান তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম
এছাড়া বিয়ে নিয়ে অনেকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকেন। যেমন মোবাইলে কবুল বললে কি বিয়ে হয়, ভিডিও কলে বিবাহ কি জায়েজ, বিয়েতে সাক্ষী থাকার হুকুম কি, সাক্ষী ছাড়া কি বিয়ে হয়, কাজী ছাড়া কি বিয়ে হয়, ৩ বার কবুল বললেই কি বিয়ে হয়ে যায়, মজা করে কবুল বললে কি বিয়ে হবে ইত্যাদি। এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ভূমিকা

তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির কারণে মানুষের জীবনে এবং কর্মে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান সময়ে অনেকেই বিদেশে থাকাকালীন মোবাইল ফোনে বিবাহ করে থাকেন। তাদেরকে দেখে অন‍্য মানুষরাও অনুপ্রাণিত হয়ে অনলাইন বিবাহ করতে চান। কিন্তু দূরে থেকে বিয়ে করার জন‍্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন রয়েছে।

ইসলামে বিবাহ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। অনেকের জন‍্য এটি ওয়াজিব বা ফরজ। বিয়ে করার ক্ষেত্রে দেরি করা উচিত নয়। তবে অনেক আলেমদের মতে অনলাইনে বিবাহ করা অপছন্দের কাজ, তবে এটি জায়েজ।

স্বামী ও স্ত্রী যদি কাছাকাছি না থাকে তাহলে কোনো এক সময় সংসারে ফাটল ধরতে শুরু করে। এজন্য বিদেশে অবস্থান করে অনলাইনে বিয়ে করলে দ্রুত দেশে আসার চেষ্টা করতে হবে। চলুন এখন মোবাইল ফোন ব‍্যবহার করে অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।

অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম

অনলাইনে বিয়ে করার ক্ষেত্রে মুসলিমদের জন‍্য ইসলামে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম পদ্ধতি রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিয়ে সম্পন্ন করাও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় আমাদের বিভিন্ন কাজের জন্য দূরে সফর করতে হয়।

এ সময় বিয়ে করার প্রয়োজন হলে অনলাইনে বিয়ে করতে পারেন কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন মেনে। আপনি যদি পাত্রী অথবা পাত্র দেখে থাকেন তাহলে তো ভালোই। আর যদি না দেখে থাকেন তাহলে ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রথমে দেখে নিবেন।

কেননা বিবাহের আগে পাত্র পাত্রী একে অপরকে দেখা গুরুত্বপূর্ণ। তারপর দেনমোহর নির্ধারণ করতে হবে। তারপর নিয়ম অনুযায়ী আপনারা অনলাইনে বিবাহ করতে পারেন। অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম হলো দুইটি। নিচে অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম পদ্ধতি বলা হলো:

১. অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম (প্রথম পদ্ধতি):

ছেলে বা মেয়ে যদি দূরে থাকে তাহলে তারা অনলাইনে ভিডিও কল দিবে। মেয়ের কাছে তার অভিভাবক বা পিতা মাথা উপস্থিত থাকবে। সেই সাথে ছেলের কাছে দুইজন এবং মেয়ের কাছে দুইজন সাক্ষী নিযুক্ত করতে হবে। তারপর ইজাব কবুলের মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন করতে হবে। এইভাবে বিবাহ করা বা বিয়ে করা অনেক আলেমদের মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বিশেষ করে হানাফি মাজহাবের মতে, বিয়ে করতে হলে ছেলে মেয়ে একই মজলিসে উপস্থিত থাকতে হবে। তা না হলে বিয়ে শুদ্ধ হবে না। তবে কেউ যদি ছেলের পক্ষ থেকে উকিল হিসেবে উপস্থিত থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তাহলে বিয়ে শুদ্ধ হবে। নিচে দ্বিতীয় পদ্ধতিতে অনলাইনে বিয়ে করার যে নিয়ম তুলে ধরেছি সে নিয়ম অনুযায়ী আপনারা বিয়ে করতে পারেন।
কেননা সেই নিয়ম নিয়ে আলেমদের মধ‍্যে কোনো বিরোধিতা নেই। আর এটিই হলো অনলাইনে বিয়ে করার সবচেয়ে সহিহ পদ্ধতি। আবার ইজাব কবুল কি সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। তাই নিচে সে সম্পর্কে বলা হলো।

ইজাব কবুল কি?

ইজাব কবুল হলো যিনি বিবাহ করাবেন তিনি বিবাহের পাত্রকে লক্ষ্য করে বলবেন যে, আমি আপনাকে তার (মেয়ের পিতার নাম বলবে) মেয়ের সঙ্গে এতো টাকা দেনমোহর পরিশোধ করার মাধ্যমে বিবাহ দিলাম বা আপনার হাতে তুলে দিলাম।

তারপর যিনি বিবাহ পড়াবেন তিনি পাত্রকে বলবেন, আপনি কি রাজি আছেন? পাত্র বলবেন আমি রাজি আছি বা আমি কবুল করলাম। এই প্রক্রিয়াকেই মূলত ইজাব কবুল বলা হয়।

২. অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম (দ্বিতীয় পদ্ধতি):

অনলাইনে বিয়ে করার সবচেয়ে শুদ্ধ নিয়ম হলো শুরুতেই ছেলে মেয়ে একে অপরের সাথে কথা বলবে এবং চেহারা দেখে নিবে। তারপর দেনমোহর ধার্য করা হবে। ছেলের পক্ষ থেকে মেয়ের কাছে উকিল বা প্রতিনিধি হিসেবে বিয়ের জন্য কাউকে পাঠাতে হবে। যাকে পাঠানো হবে তিনি ছেলের পক্ষ থেকে ইজাব কবুল করবেন।

এছাড়া আগেই দেনমোহর পরিশোধ করে দেওয়া জরুরী। বিয়েতে মেয়ের অভিভাবক এবং সাক্ষী উপস্থিত থাকবে। ছেলের পক্ষ থেকে যেহেতু প্রতিনিধি হিসেবে কাউকে পাঠানো হয়েছে সেহেতু ছেলেকে আর ভিডিও কলে থাকার প্রয়োজন নেই।

তবে চাইলে থাকতে পারে। সকল আলেমগণ অনলাইনে বিয়ে করতে হলে এই পদ্ধতিতে বিবাহ করার জন্য বলে থাকেন। কেননা এটি হচ্ছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। আর অনলাইনে বিয়ে করার পরে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নিবন্ধন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি অবশ্যই করে নিবেন।

বিদেশ থেকে ফোনে বিবাহ করার নিয়ম

বিভিন্ন কাজে বিদেশে থাকা মানুষের অনেক সময় পারিবারিক পরিকল্পনায় বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু বিদেশ থেকে ফোনে বিবাহ করার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানেন না তাই এখন আমরা এ সম্পর্কে জানাবো।

বিদেশ থেকে ছেলে বা মেয়ে যদি বিবাহ করতে চায় তাহলে প্রথমে ছেলে বা মেয়ে যে বিদেশে আছে তার পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি অপরপক্ষে কাছে পাঠাতে হবে উকিল হিসেবে। তিনি বিদেশে থাকা ছেলে বা মেয়ের হয়ে ইজাব কবুল করবেন। একজন কাজি নিযুক্ত করবেন তিনিই সকল নিয়মকানুন বুঝিয়ে দিবেন এবং বিয়ে পড়াবেন।

বিয়েতে দেনমোহর ধার্য করা অবশ্যই একটি কাজ। আপনার উকিল যখন আপনার পক্ষ থেকে ইজাব কবুল করার জন্য যাবেন তখন ২ জন সাক্ষীও থাকতে হবে। অনেকেই জানেন না সাক্ষী কতজন এবং কাদেরকে বানাতে হবে। সাক্ষী হিসেবে ২ জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ অথবা ১ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ২ জন প্রাপ্তবয়স্কা মহিলা থাকতে হবে।
তারপর নিযুক্ত উকিলের সামনে কাজি বলবেন এতো টাকা দেনমোহর ধার্য করে অমুক মানুষের (পাত্রের বাবা অথবা অভিভাবকের নাম) মেয়ের সঙ্গে বিবাহ দিলাম। নিযুক্ত উকিল বলবেন আমি রাজি বা কবুল করলাম। তাহলে ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে বিবাহ সম্পন্ন হয়ে যাবে।

এরপর কাজী অফিসে গিয়ে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বিবাহ নিবন্ধন করে নিতে হবে। তাহলেই সমস্ত কাজ শেষ। এ ছিল বিদেশ থেকে ফোনে বিবাহ করার নিয়ম।

মোবাইলে কবুল বললে কি বিয়ে হয়

অনেকেই মজার ছলে কয়েকজন মিলে যখন ভিডিও কলে কথা বলে তখন বলে থাকে যে আমি তোমাকে বিবাহ করলাম। আবার ছেলে অথবা মেয়ে বলে থাকে আমি কবুল। এরকম মজা করা মোটেও ঠিক না।

কেননা কিছু আলেমদের মতে মোবাইলে ভিডিও কলে যদি কেউ কাউকে বিবাহ করলাম বলে এবং অপরজন যদি কবুল বলে তাহলে বিয়ে হয়ে যাবে যদি ২ জন পুরুষ সাক্ষী থাকে। কিন্তু হানাফি মাজহাবের আলেমগণ সহ বেশিরভাগ আলেমগণের মতে মোবাইলে কবুল বললেই বিয়ে হবে না।

বিয়ে করার জন‍্য অবশ্যই একই মজলিসে অবস্থান করতে হবে ছেলে এবং মেয়েকে, তাও আবার সাক্ষী সহ। তবে অনেকে বলেন এখানে একই মজলিস বলতে একই সময়ে একই পর্যায়কে বুঝায়। সে সেক্ষেত্রে বিবাহ হয়ে যাবে। এসকল জটিল বিষয় সম্পর্কে জানতে একজন বিজ্ঞ আলেমের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

ভিডিও কলে বিবাহ কি জায়েজ

ভিডিও কলে বিবাহ কি জায়েজ তা অনেকেরই প্রশ্ন। ভিডিও কলে বিবাহ জায়েজ নাজায়েজ নিয়ে আলেমদের মধ‍্যে মতপার্থক‍্য রয়েছে। তাই এই বিষয়ে আলেমের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে অনেক আলেম বলেছেন ভিডিও কলে বিবাহ জায়েজ। এক্ষেত্রে ইজাব কবুল করতে হবে উচ্চস্বরে এবং ভিডিও কলের রেকর্ড থাকলে আরও ভালো হবে।

আবার অনেক আলেমদের মতে ভিডিও করে বিবাহ জায়েজ নেই। কেননা মজলিস একই হওয়া জরুরী। সকল দিক বিবেচনা করে বলা যায় বিদেশ থেকে ভিডিও কলে বিবাহ করার পর দেশে এসে পুনরায় ইজাব কবুল করে বিয়ে নিবন্ধন করা উচিত। এছাড়া একজন কাছের কাউকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়ে ইজাব কবুলের মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন করতে পারেন।

বিয়েতে সাক্ষী থাকার হুকুম কি

বিয়েতে সাক্ষী থাকার হুকুম কি সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না বা জানতে চান। তাই এখন আমরা বিয়েতে সাক্ষী থাকার হুকুম কি সে সম্পর্কে আপনাকে জানাবো। বিয়েতে সাক্ষী থাকা আবশ্যক।

কেননা হাদিস শরীফে (দাউদ: ২০৮৫) এসেছে সাক্ষী এবং মেয়ের অভিভাবক ছাড়া বিয়ে সম্পন্ন হয় না। তাই বিয়ে করতে হলে অবশ্যই ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী দুজন পুরুষ অথবা একজন পুরুষ এবং একজন মহিলাকে সাক্ষী হিসেবে রাখতে হবে।

সাক্ষী ছাড়া কি বিয়ে হয়

অনেকের প্রশ্ন করে থাকেন সাক্ষী ছাড়া কি বিয়ে হয়? আমরা বিভিন্ন আলেমদের থেকে শুনেছি এবং হাদিস পড়ে দেখেছি যে সাক্ষী ছাড়া বিয়ে কখনও কবুল বা সম্পন্ন হবে না। বিয়েতে সাক্ষী উপস্থিত থাকা আবশ্যক। যদি কেউ সাক্ষী ছাড়া বিয়ে করে তাহলে তার বিয়ে বাতিল বলে গণ্য হবে।
আর সাক্ষী হিসেবে পিতা, ভাই চাচা, দাদা এছাড়া কাছের কেউ মানুষ থাকা জরুরী বিশেষ করে পাত্রীর ক্ষেত্রে। সুতরাং উক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে সাক্ষী ছাড়া বিয়ে হয় না।

কাজী ছাড়া কি বিয়ে হয়

এখন আলোচনা করব কাজী ছাড়া বিয়ে হয় কিনা সে সম্পর্কে। সম্মানিত পাঠক বৃন্দ কাজী ছাড়াও বিবাহ সম্পন্ন হয়। সাধারণত সাক্ষী সহ ইজাব কবুল করার মাধ্যমে ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। এর জন্য কাজী থাকা জরুরী নয়।

তবে বাংলাদেশী আইন অনুযায়ী বিবাহ করার ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন অবশ্যই করতে হবে। তাই এক্ষেত্রে কাজীর প্রয়োজন হয়। কেননা তিনি নিবন্ধের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে দেন।

৩ বার কবুল বললেই কি বিয়ে হয়ে যায়

অনেক ব্যক্তি প্রশ্ন করে থাকেন যে, ৩ বার কবুল বললেই কি বিয়ে হয়ে যায়? এর উত্তর হলো না, ৩ বার কবুল বললেই বিয়ে হয়ে যায় না। কেননা বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার জন্য আরও নির্দিষ্ট কিছু শর্ত এবং পদ্ধতি রয়েছে। যেমন সাক্ষী থাকা আবশ্যক, স্পষ্টভাবে বলতে হবে আমি তোমাকে বিবাহ করতেছি এবং অপর পক্ষকে বলতে হবে আমি কবুল করলাম।

এছাড়া দেনমোহর ধার্য করতে হবে এবং মেয়ের অভিভাবক উপস্থিত থাকা জরুরী। আর অনেক সিনেমাতে এবং সামাজিক রীতিতে দেখা যায় ৩ বার কবুল বলে থাকে যা ইসলামী শরীয়তের কোনো বিধানে নেই। এটি কেবলমাত্র একটি সামাজিক রীতি।

মজা করে কবুল বললে কি বিয়ে হবে

অনেকেই মজার ছলে স্ত্রীকে তালাক দিলাম বলে থাকে। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে, ছেলেমেয়েরা একে অপরকে মজা করে কবুল বলে থাকে বা আমি তোমাকে বিবাহ করলাম এবং অপরজন বলে আমি কবুল করলাম। এরকম করলে তালাক বা বিয়ে হয়ে যাবে কিনা সে সম্পর্কে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। 
শুধুমাত্র কবুল বললেই বিবাহ সম্পন্ন হয়ে যায় না। বিবাহ সম্পন্ন করার জন্য একে অপরকে স্পষ্টভাবে বলতে হয়। অর্থাৎ স্পষ্টভাবে সহমত পোষণ করার জন্য বলতে হয় আমি তোমাকে বিবাহ করলাম এবং অপরপক্ষকে বলতে হয় আমি রাজি বা আমি কবুল করলাম।

এছাড়া দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ মানুষ সাক্ষী থাকাও আবশ্যক। সাক্ষী যদি না থাকে তাহলে বিবাহ হবে না। বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার আরেকটি শর্ত হলো একই মজলিসে অবস্থান করা।

FAQ: অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম ও বিদেশ থেকে ফোনে বিবাহ করার নিয়ম সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর

১. বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দেনমোহর কত টাকা ধার্য করা যায়?

উত্তর: ইসলামী শরীয়তের বিধান অনুযায়ী বিয়েতে সর্বনিম্ন দেনমোহর ধার্য করা যায় 10 দিরহাম। এটি 30.618 গ্রাম রূপার সমান। সুতরাং বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দেনমোহর ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা হতে পারে। রুপার দামের পরিবর্তন হলে দেনমোহরের পরিমাণও পরিবর্তন হতে পারে, যদি টাকা দিয়ে দেনমোহর পরিশোধ করতে চান।

২. দেনমোহর কিভাবে নির্ধারণ করা উচিত?

উত্তর: দেনমোহর স্বামীকে অবশ্যই আদায় করতে হবে। কেননা এটি স্ত্রীর হক। তবে দেনমোহর নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্বামীর আর্থিক অবস্থার দিকে লক্ষ্য করতে হবে। স্বামীর আর্থিক অবস্থার দিকে লক্ষ্য করে দেনমোহর নির্ধারণ করা উচিত।

৩. কোন কোন কথা মজা করে বললেও তা সত্যি সত্যিই নির্ধারণ হয়ে যায়?

উত্তর: হাদিসে আছে তিনটি জিনিস মজার ছলে বললে তা নির্ধারণ হয়ে যায়। তাহলো:
  • কেউ যদি মজা করে তার বউকে তালাক দেয় তাহলে তালাক হয়ে যাবে।
  • একাই মজলিসে ছেলে মেয়ে একে অপরকে মজা করে যদি বলে আমি তোমাকে বিয়ে করলাম এবং অপরজন যদি বলে আমি মেনে নিলাম, তাহলে সত্যি সত্যিই বিয়ে হয়ে যাবে, যদি দুজন সাক্ষী থাকে।
  • কোনো গোলামকে যদি মজার ছলে বলা হয় তোমাকে আজাদ করে দিলাম, তাহলে গোলাম আজাদ হয়ে যাবে।

লেখকের মন্তব্য: বিদেশ থেকে ফোনে বিবাহ করার নিয়ম

অনেক মানুষ রয়েছে যারা পিতা-মাতাকে না জানিয়ে বিবাহ করে থাকে যা মোটেও উচিত কাজ নয়। কেননা আহলে হাদিস ভাইদের মতে বিবাহ করার জন্য অভিভাবক উপস্থিত থাকা আবশ্যক। তবে হানাফিদের মতে অভিভাবকের সম্মতির প্রয়োজন নেই, প্রাপ্তবয়স্কা মেয়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, যা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

যাইহোক বিয়ে একটি সামাজিক রীতিনীতি। তাই সকলকে জানিয়েই বিয়ে করা উচিত। এছাড়া অনলাইনে বিয়ে করার ক্ষেত্রে একজন উকিল পাঠিয়ে বিয়ের সম্পন্ন করা উচিত কেননা এটি সহিহ পদ্ধতি। সম্মানিত পাঠক, আশা করি আপনি অনলাইনে বিয়ে করার নিয়ম এবং বিদেশ থেকে ফোনে বিবাহ করার নিয়ম সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

আমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, তাই ইসলামিক বিবাহ সম্পর্কে আমার অনেক জ্ঞান রয়েছে, যা আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। আপনার আরও প্রশ্ন থাকলে আমাদের আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন বা নিচে কমেন্ট করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অনলাইন ইনকাম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url